
সারা দেশে ১৪ জন পুলিশ সদস্য নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ সদর দপ্তর। এর মধ্যে সিরাজগঞ্জের এনায়েতপুর থানায় ১৩ জন নিহত হয়েছেন। কুমিল্লার ইলিয়টগঞ্জে নিহত হয়েছেন একজন।
এ নিয়ে সারা দেশে আজ নিহতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৬৭ জনে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকে অসহযোগ আন্দোলন কর্মসূচি চলছে। সরকার পতনের এক দফা দাবিতে চলমান এ আন্দোলনে রোববার দিনভর সারা দেশে সংঘর্ষ, গুলি ও পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে।
এদিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে বিক্ষোভকারীরা চারজনের মরদেহ নিয়ে গেছেন। সন্ধ্যা ৬টার দিকে নিহত ৪ জনের লাশ নিয়ে বিক্ষোভকারীরা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে যান। এ সময় আন্দোলনকারীরা নানা স্লোগান দেন। সেখান থেকে আন্দোলনকারীরা রাজধানীর শাহবাগ যাওয়ার পথে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যে পুলিশ বাধা দেয়।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অসহযোগ কর্মসূচি ঘিরে লক্ষ্মীপুরে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীদের পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় গুলিবিদ্ধ হয়ে এক কলেজছাত্র নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন অর্ধশতাধিক মানুষ। রোববার বেলা ১১টার দিকে জেলা শহরের উত্তর তেমুহনী থেকে ঝুমুর পর্যন্ত এলাকায় এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষ চলাকালে তিনটি মোটরসাইকেলে আগুন দেওয়া হয়।
এ নিয়ে দিনভর সংঘর্ষে সারা দেশে ৫৩ জন নিহত হলেন। নরসিংদীতে ৬ জন, ফেনীতে ৫ জন, সিরাজগঞ্জে ৬ জন, কিশোরগঞ্জে ৪ জন, রাজধানী ঢাকায় ৪ জন, বগুড়ায় ৪ জন, মুন্সিগঞ্জে ৩ জন, মাগুরায় ৪ জন, ভোলায় ৩ জন, রংপুরে ৪ জন, পাবনায় ৩ জন, সিলেটে ২ জন, কুমিল্লায় ২ জন, জয়পুরহাটে ১ জন, হবিগঞ্জে ১জন ও বরিশালে ১ জনসহ ৫৩ জন নিহত হয়েছেন।
আজ রোববার থেকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অসহযোগ কর্মসূচি চলছে। সরকার পতনের এক দফা দাবিতে আন্দোলন করছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। এ কর্মসূচিতে এখন পর্যন্ত (সন্ধ্যা পৌনে ৬টা পর্যন্ত) নরসিংদীতে ৫ জন, ফেনীতে ৫ জন, সিরাজগঞ্জে ৪ জন, রাজধানী ঢাকায় ৪ জন, মুন্সিগঞ্জে ৩ জন, বগুড়ায় ৪ জন, মাগুরায় ৩ জন, ভোলায় ৩ জন, রংপুরে ৪ জন, পাবনায় ২ জন, সিলেটে ২ জন, কুমিল্লায় ২ জন, জয়পুরহাটে ১ জন ও বরিশালে ১ জনসহ ৪৩ জন নিহত হয়েছেন।
আজ রোববার থেকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অসহযোগ কর্মসূচি চলছে। সরকার পতনের এক দফা দাবিতে আন্দোলন করছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। এ কর্মসূচিতে এখন পর্যন্ত (বিকেল ৫টা পর্যন্ত) নরসিংদীতে ৫ জন, ফেনীতে ৫ জন, সিরাজগঞ্জে ৪ জন, মুন্সিগঞ্জে ৩ জন, বগুড়ায় ৩ জন, মাগুরায় ৩ জন, ভোলায় ৩ জন, রংপুরে ৩ জন, পাবনায় ২ জন, সিলেটে ২ জন, রাজধানী ঢাকায় ২ জন, কুমিল্লায় ১ জন, জয়পুরহাটে ১ জন ও বরিশালে ১ জনসহ ৩৮ জন নিহত হয়েছেন।
আগামীকাল সোমবার থেকে তিনদিনের জন্য সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। সরকার আজ রোববার নির্বাহী আদেশে এ ছুটি ঘোষণা করেছে।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল সূত্র জানায়, আজ বিকেল তিনটা পর্যন্ত রাজধানীর শাহবাগ, শনির আখড়া, নয়াবাজার, ধানমন্ডি, সায়েন্স ল্যাবরেটরি, পল্টন, প্রেসক্লাব এবং মুন্সিগঞ্জ থেকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় ৫৬ জনকে হাসপাতালে আনা হয়েছে। এর মধ্যে ১৬ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বাকিদের প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়।
রাজধানীর মিরপুর-১০ নম্বর গোলচত্বরের আশপাশে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা হয়েছে। রোববার বেলা ২টার দিকে কাজীপাড়ার দিক থেকে বিক্ষোভকারীদের একটি দলের মিরপুর-১০ নম্বরের দিকে যাওয়ার পথে পাল্টাপাল্টির ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এ সময় মিরপুর-১০ নম্বরে অবস্থানরত আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা গুলিও ছোড়েন।
ফেনীতে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও আওয়ামী লীগের সংঘর্ষে পাঁচজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। রোববার বেলা দুইটার দিকে সংঘর্ষ শুরু হয়। সকাল থেকে বিক্ষোভকারীরা অসহযোগের সমর্থনে মহিপাল এলাকায় বিক্ষোভ করছিলেন। তবে দুপুর দুইটার দিকে মহিপাল সেতুর নিচে ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও আওয়ামী লীগের কর্মীরা মিছিল নিয়ে এলে সংঘর্ষ শুরু হয়। এ সময় মুহুর্মুহু গুলি, ককটেল বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়। সংঘর্ষে নিহত পাঁচজনের নাম পরিচয় জানা যায়নি। এ ছাড়া তিন গণমাধ্যমকর্মীসহ অন্তত ১০জন আহত হয়েছেন।
সংঘর্ষে হতাহতদের ফেনী ২৫০ শয্যার জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হয়। হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার আসিফ ইকবাল দুপুর সাড়ে তিনটার দিকে বলেন, এ মুহূর্তে হাসপাতালের জরুরি বিভাগে পাঁচজনের লাশ রয়েছে। তাঁরা সবাই মহিপালে সংঘর্ষের ঘটনায় মারা গেছেন।
ইটের আঘাতে আহতদের মধ্যে আছেন বাংলাভিশনের প্রতিনিধি রকিবুল ইসলাম, ইনডিপেনডেন্ট টেলিভিশনের ক্যামেরা পারসন সুলতান মাহমুদ(২৩), জবাবদিহি পত্রিকার সাংবাদিক হাসনাত তুহিন (৪৫), পথচারী সাইফুল ইসলাম ও যুবদল নেতা সাইদুল ইসলাম (৩২)। এ ছাড়া আরও পাঁচজন গুলিবিদ্ধ হন। তবে তাদের নাম জানা যায়নি।
আজ রোববার থেকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অসহযোগ কর্মসূচি চলছে। সরকার পতনের এক দফা দাবিতে আন্দোলন করছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। এ কর্মসূচিতে এখন পর্যন্ত (বিকেল ৪ টা পর্যন্ত) ফেণীতে ৫ জন, সিরাজগঞ্জে ৪ জন, মুন্সিগঞ্জে ৩ জন, বগুড়ায় ৩ জন, মাগুরায় ৩ জন, ভোলায় ৩ জন, রংপুরে ৩ জন, পাবনায় ২ জন, সিলেটে ২, কুমিল্লায় ১ জন, জয়পুরহাটে ১ জন, রাজধানী ঢাকায় ১ জন ও বরিশালে ১ জনসহ ৩২ জন নিহত হয়েছেন।
তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত বলেছেন, আলাপ আলোচনার মাধ্যম শান্তিপূর্ণ উপায়ে সমস্যার সমাধান করতে চাই। সন্ত্রাসীদের দমনে জনগণের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
ঢাকার সোনারগাঁও হোটেল মোড় ও কারওয়ান বাজার এলাকায় সংঘর্ষ চলছে। বিক্ষোভকারীরা বাংলামোটরের দিকে অবস্থান নিয়ে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করছেন। কারওয়ান বাজারের দিকে অবস্থান নিয়েছেন আওয়ামী লীগের নেতা–কর্মীরা। এ অংশে পুলিশ সদস্যরাও আছেন। পুলিশ সাউন্ড গ্রেনেড ও কাঁদানে গ্যাস (টিয়ার শেল) নিক্ষেপ করছে।
আজ সন্ধ্যা ৬টা থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত ঢাকাসহ সব বিভাগীয় সদর, সিটি করপোরেশন, পৌরসভা, শিল্পাঞ্চল, জেলা সদর এবং উপজেলা সদরে কারফিউ বলবৎ করা হয়েছে।
সারা দেশে সংঘাত–সংঘর্ষের ঘটনায় আজ রোববার সন্ধ্যা ছয়টা থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত কারফিউ বলবৎ করা হয়েছে। এই সিদ্ধান্ত ঢাকাসহ সব বিভাগীয় সদর, সিটি করপোরেশন, পৌরসভা, শিল্পাঞ্চল, জেলা ও উপজেলা সদরের জন্য কার্যকর হবে। রোববার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ জনসংযোগ মো. শরীফ মাহমুদ প্রথম আলোকে এই তথ্য জানিয়েছেন।
এর আগে গতকাল রাতে সিদ্ধান্ত হয়েছিল পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত কারফিউ চলবে। তবে ঢাকা মহানগর, ঢাকা জেলা, গাজীপুর মহানগর ও গাজীপুর জেলা এবং নরসিংদী ও নারায়ণগঞ্জে আজ থেকে সকাল ৬টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত কারফিউ শিথিল থাকবে। আর অন্যান্য জেলার ক্ষেত্রে জেলা প্রশাসক সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলোচনা করে কারফিউ শিথিলের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন। এখন গ্রাম এলাকা বাদে প্রায় সারা দেশেই আজ সন্ধ্যা ছয়টা থেকে কারফিউ বলবৎ করা হয়েছে।
সরকারি চাকরিতে কোটা সংষ্কার দাবির আন্দোলনকে ঘিরে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে গত ১৯ জুলাই সারা দেশে কারফিউ জারি করে সরকার। প্রথমে ওই দিন রাত ১২টা থেকে কারফিউ চলে। পরে এলাকাভেদে আলাদাভাবে বিরতি (শিথিল) দিয়ে কারফিউ চলে আসছে।
গতকাল সরকার পদত্যাগের এক দফা দাবি ঘোষণা করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। তারা আজ থেকে অসহযোগ আন্দোলনের ডাক দিয়েছে। এ নিয়ে আজ রোববার ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় সংঘাত–সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে এখন পর্যন্ত ১৮ জনের প্রাণহানির খবর পাওয়া গেছে।
রাজধানীর যাত্রাবাড়ী এলাকায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করে রেখেছেন বিক্ষোভকারীরা। আজ রোববার সকাল ১০টার দিকে যাত্রাবাড়ী থেকে রায়েরবাগ এলাকার সড়কে বিক্ষোভকারীদের অবস্থান করতে দেখা গেছে।
যাত্রাবাড়ী থানার সামনে আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের নেতা-কর্মীদের অবস্থান করতেও দেখা গেছে। বেলা পৌনে একটার দিকে বিক্ষোভকারী ও সরকার সমর্থকদের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া হয়। এ সময় কয়েকটি মোটরসাইকেলে অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুর চালানো হয়েছে। পরে সড়ক অবরোধ করা হয়।
কেউ আইন লঙ্ঘন করলে পুলিশ বা আইনপ্রয়োগকারী সংস্থা রাবার বুলেট, টিয়ার শেল ও তারপরে প্রাণঘাতী গুলি ব্যবহার করতে পারে। যদি কোনো লঙ্ঘন না ঘটে বা কোনো দাঙ্গা না হয়, তবে কোনো প্রাণঘাতী গুলি (লাইভ বুলেট) ব্যবহার করা যাবে না বলে পর্যবেক্ষণ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
প্রাণঘাতী গুলি ছোড়া বন্ধ ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ‘কথিত আটক’ ছয় সমন্বয়কের মুক্তি নিয়ে করা রিটটি আজ রোববার কয়েক দফা পর্যবেক্ষণসহ খারিজ করে আদেশ দিয়েছেন। বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি এস এম মাসুদ হোসাইন দোলনের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ এ আদেশ দেন।
পর্যবেক্ষণে আদালত বলেছেন, একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে আইনের মৌলিক দিক ও নাগরিকের সাংবিধানিক অধিকারের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে পুলিশের কাজ করা অপরিহার্য।
দেশের বিভিন্ন স্থানে আন্দোলনকারীদের ওপর প্রাণঘাতী গুলি না চালাতে এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ‘কথিত আটক’ ছয় সমন্বয়ককে মুক্তি দিতে নির্দেশনা চেয়ে গত ২৯ জুলাই রিট করেন সুপ্রিম কোর্টের দুই আইনজীবী। তাঁরা হলেন আইনজীবী মানজুর-আল-মতিন ও আইনুন্নাহার সিদ্দিকা। রিটের ওপর গত ২৯ ও ৩০ জুলাই শুনানি হয়। আগের ধারাবাহিকতায় শুনানি নিয়ে পর্যবেক্ষণসহ রিটটি খারিজ করে আজ আদেশ দেওয়া হয়।
আজ রোববার থেকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অসহযোগ কর্মসূচি চলছে। সরকার পতনের এক দফা দাবিতে আন্দোলন করছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। এ কর্মসূচিতে এখন পর্যন্ত মুন্সিগঞ্জে ৩ জন, বগুড়ায় ৩ জন, মাগুরায় ৩ জন, পাবনায় ২ জন, কুমিল্লায় ১ জন, ভোলায় ৩ জন ও রংপুরে ৩ জনসহ ১৮ জন নিহত হয়েছেন।
সিলেটে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। রোববার দুপুর ১২টার দিকে নগরের কোর্টপয়েন্ট এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এতে বেশ কয়েকজন গুরুতর আহত হয়েছেন। তাৎক্ষণিকভাবে কারও নাম-পরিচয় জানা যায়নি।
একাধিক প্রত্যক্ষদর্শী জানান, পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী বেলা ১১টার পর থেকে শিক্ষার্থী ও স্থানীয় লোকজন নগরের কোর্টপয়েন্টে জড়ো হতে শুরু করেন। এ সময় অনেকে লাঠিসোঁটা নিয়ে মিছিলে অংশ নেন। দুপুর ১২টার দিকে পুলিশ অতর্কিতভাবে জমায়েতের উদ্দেশে কাঁদানে গ্যাসের শেল নিক্ষেপ করে। এরপর উভয়পক্ষে সংঘর্ষ বাধে। বেলা পৌনে একটার দিকে এই প্রতিবেদন লেখার সময় সেখানে সংঘর্ষ চলছিল।
চাঁদপুর শহরে আজ রোববার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সর্বাত্মক অসহযোগ কর্মসূচি ঘিরে সংঘর্ষ হয়েছে। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে শহরের তালতলা এলাকায় আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের সংঘর্ষ শুরু হয়। এতে অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন।
আহতদের চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক মাহবুবুর রহমান। তবে তাৎক্ষণিকভাবে আহতদের নাম-পরিচয় জানা যায়নি।
রাজধানীর গ্রিন রোডের একটি গলিতে কয়েকজন শিক্ষার্থীকে দেয়ালে গ্রাফিতি আঁকা ও স্লোগান দিয়ে বিক্ষোভ করতে দেখা গেছে। আজ রোববার দুপুর ১২টার দিকে গ্রিন রোডের ১৫/এ গ্রিন স্কয়ার গলিতে এ দৃশ্য দেখা যায়।
এই শিক্ষার্থীরা ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস’, ‘এক দফা এক দাবি’, ‘আমার ভাইয়ের রক্তের জবাব দে, জবাব দে’সহ বিভিন্ন ধরনের স্লোগান দেন। আর গ্রাফিতিতে ‘গর্জে ওঠো আরেকবার’সহ নানা ধরনের বিষয় উঠে এসেছে। এই গলির কাছেই সায়েন্স ল্যাব মোড়ে আন্দোলনকারীরা বিক্ষোভ করছেন।
রংপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে দুইজন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ১০ জন।
এ নিয়ে অসহযোগ আন্দোলনে মুন্সিগঞ্জে ২ জন, রংপুরে দুইজন এবং মাগুরায় দুইজনসহ ছয়জন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
রাজধানীর বাংলামোটরে আওয়ামী লীগ ও দলের অঙ্গ সংগঠনের নেতা–কর্মীদের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষ শুরু হয়েছে। শাহবাগ ও হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল মোড়ে বিক্ষোভকারীরা অবস্থান নেওয়ার পর কারওয়ান বাজার থেকে আওয়ামী লীগের একটি মিছিল সেদিকে যায়। তারপর বাংলামোটরে সংঘর্ষ শুরু হয়। বিক্ষোভকারীদের দিকে গুলি ছুঁড়তে দেখা গেছে। কয়েকজন বিক্ষোভকারী আহত হলে তাদের হাসপাতালে নিয়ে যেতে দেখা যায়।
রংপুরের বদরগঞ্জে ছাত্রলীগ ও যুবলীগের নেতাকর্মীরা শিক্ষার্থীদের লাঠিপেটা ও ধাওয়া দিয়েছেন। পরে বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা একত্রিত হয়ে স্থানীয় আওয়ামী লীগ সংসদ সদস্য আবুল কালাম মো. আহসানুল হক চৌধুরী (ডিউক) ও পৌরসভার মেয়র আহসানুল হক চৌধুরীর (টুটুল) বাসায় আগুন দিয়েছে। দুপুর ১২টার দিকে এই ঘটনা ঘটে। বিক্ষোভকারী লাঠি হাতে ওই দুই বাড়ি ঘেরাও করে বিক্ষোভ করছে।
মাগুরায় পুলিশ ও আওয়ামী লীগের নেতা–কর্মীদের সঙ্গে সংঘর্ষে জেলা ছাত্রদলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসানসহ দুজন নিহত হয়েছেন। মেহেদী হাসানের বাড়ি পৌরসভার পারনান্দুয়ালী এলাকায়।
বেলা সাড়ে ১১টার দিকে পারনান্দুয়ালী এলাকায় সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হন তিনি। মাগুরা ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালের পরিচালক মহসিন উদ্দিন জানান, দুপুর আনুমানিক ১২টার সময় গুলিবিদ্ধ অবস্থায় ওই যুবককে হাসপাতালে আনা হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় সাড়ে ১২টার দিকে তিনি মারা যান। তার শরীরে গুলির চিহ্ন রয়েছে। তিনি জানান, এ পর্যন্ত অন্তত ১০ জন আহত অবস্থায় হাসপাতালে এসেছেন।
এ নিয়ে অসহযোগ আন্দোলনে মুন্সিগঞ্জে ২ জন এবং মাগুরায় একজনসহ তিনজনের নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেল।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলা সদরের কুট্টাপাড়া মোড় থেকে বিশ্বরোড মোড় পর্যন্ত এক কিলোমিটারে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থী অবস্থান নিয়েছে। সকাল নয়টা থেকে শিক্ষার্থীরা জড়ো হতে থাকে। বেলা ১১টার দিকে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে সব ধরনের যানচলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
জামালপুরের সরিষাবাড়ী উপজেলায় আরামনগর বাজার এলাকায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ মিছিল করেছে। প্রায় দুই ঘন্টা জামালপুর-সরিষাবাড়ী সড়ক অবরোধ করে চলে এই বিক্ষোভ। এতে সড়কের যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
রাজধানীর সায়েন্স ল্যাব এলাকায় আজ রোববার বেলা সাড়ে ১১টা থেকে বিক্ষোভ করছেন বিক্ষোভকারীরা। দুপুরে সায়েন্স ল্যাব মোড়ের পুলিশ বক্স ভাঙচুর করা হয়েছে। পরে ভাঙা লোহালক্কড় একজনকে রিকশায় করে নিয়ে চলে যেতে দেখা যায়।
বিক্ষোভকারীরা সরকারবিরোধী বিভিন্ন স্লোগান দিচ্ছেন। সায়েন্স ল্যাব হয়ে কোনো যানবাহন চলাচল করছে না। আশপাশ এলাকায় পুলিশের অবস্থান দেখা যায়নি। ওই এলাকার সড়ক বিভাজক ভাঙচুর করা হয়েছে। সড়কে ইটের ভাঙা অংশ ছড়িয়েছিটিয়ে আছে।
মেটার প্ল্যাটফর্ম ফেসবুক, মেসেঞ্জার, হোয়াটসঅ্যাপ ও ইনস্টাগ্রাম বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে সরকারি একটি সংস্থা। রোববার বেলা ১টার পর ইন্টারন্যাশনাল ইন্টারনেট গেটওয়ে (আইআইজি) প্রতিষ্ঠানগুলোকে এ নির্দেশ দেওয়া হয়।
সরকার পদত্যাগের এক দফা দাবিতে আজ থেকে সর্বাত্মক অসহযোগ আন্দোলনের ডাক দিয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। এই আন্দোলনে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। সংঘর্ষে সারা দেশে বেলা আড়াই পর্যন্ত ৫ জন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
এ পরিস্থিতিতে আজ বেলা ১২টার দিকে মোবাইল অপারেটরদের ফোর-জি ইন্টারনেট সেবা বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হয়। ফোর-জি বন্ধ থাকলে মোবাইল ইন্টারনেট ব্যবহার করা যায় না। তখন শুধু টু-জির মাধ্যমে কথা বলা যায়। দেশে মোবাইল ইন্টারনেট ব্যবহারকারী ১২ কোটির বেশি।
ঘণ্টাখানেক পর বেলা ১টার দিকে আইআইজি প্রতিষ্ঠানগুলোকে মেটার ক্যাশ সার্ভার বন্ধের জন্য মৌখিকভাবে নির্দেশ দেওয়া হয়। তবে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট এখনো সচল রয়েছে।
কোটা সংস্কার আন্দোলনের এক পর্যায়ে ১৭ জুলাই রাত থেকে মোবাইল ইন্টারনেট এবং ১৮ জুলাই রাতে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট বন্ধ হয়ে যায়। পাঁচ দিন পর ২৩ জুলাই ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সংযোগ সীমিত পরিসরে ফেরে। ১০ দিন পর ২৮ জুলাই মোবাইল ইন্টারনেট চালু হয়। কিন্তু বন্ধ ছিল মেটার প্ল্যাটফর্ম ফেসবুক, মেসেঞ্জার, হোয়াটসঅ্যাপ ও ইনস্টাগ্রাম। এ ছাড়া টিকটকও বন্ধ রাখা হয়। অন্যদিকে ব্রডব্যান্ড সংযোগে ইউটিউব চালু থাকলেও মোবাইল ডেটায় তা বন্ধ ছিল। গত ৩১ জুলাই ফেসবুকও চালু করা হয়েছিল।
এক দফা দাবিতে অসহযোগ আন্দোলনের ডাক দিয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। এ অসহযোগ আন্দোলনে রাজধানীর শাহবাগসহ কয়েক জায়গায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।
রাজধানীর শাহবাগ, শনির আখড়া, নয়াবাজারসহ বিভিন্ন স্থান থেকে আহত হয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে এসেছেন ১৩ জন। এর মধ্যে কয়েকজন গুলিবিদ্ধ রয়েছেন।
রাজধানী উত্তরার আজমপুরে বিক্ষোভকারী, পুলিশ ও আওয়ামী লীগের নেতা কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষ চলছে। আজ রোববার দুপুর ১২টার দিকে এই সংঘর্ষ শুরু হয়।
এর আগে আওয়ামী লীগের নেতা কর্মীদের ধাওয়া দেয় বিক্ষোভকারীরা। তাঁরা ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করে। বিক্ষোভকারীরা বিএনএস থেকে আজমপুর পর্যন্ত সড়কে অবস্থান করছেন। রাস্তায় যান চলাচল বন্ধ রয়েছে।
দুপুর ১২টার দিকে আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য হাবিব হাসান আজমপুরের একটি ক্যাম্পে বক্তব্য দিচ্ছিলেন। বিক্ষোভকারীরা ছিলেন সড়কে। পরে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদের পাল্টাপাল্টি ধাওয়া হয়। একপর্যায়ে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী, পুলিশ ও বিক্ষোভকারীদের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়।
সংঘর্ষের একপর্যায়ে মহাসড়কে আগুন জ্বালিয়ে দেওয়া হয়।
ফরিদপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অসহযোগ কর্মসূচির প্রথম দিনে আগুন দেওয়া হয়েছে জেলা আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের কার্যালয়ে। রোববার বেলা ১১টার দিকে শহরের হাসিবুল হাসান লাবলু সড়কে অবস্থিত জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে হামলা করা হয়। হামলার মুখে ওই কার্যালয়ের সামনে অবস্থানকারী আওয়ামী লীগের কর্মীরা পালিয়ে যায়। পরে বিক্ষুব্ধ আন্দোলনকারীরা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের সামনে অবস্থিত আটটি মোটরসাইকেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। পরে কার্যালয়ের ভেতরে ঢুকে ব্যাপক ভাঙচুর করা হয়। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বিক্ষুব্ধরা সরকারি রাজেন্দ্র কলেজের ছাত্র সংসদের ভবন দখল করে বানানো জেলা ছাত্রলীগের কার্যালয়ে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে।
এরপর বিক্ষোভকারীরা ফরিদ শাহ সড়ক ধরে কোট এলাকার দিকে যেতে চাইলে রাজেন্দ্র কলেজ ও জেলখানার মোড়ে বাধা দেয় পুলিশ। এ সময় পুলিশ রাবার বুলেট, সাউন্ড গ্রেনেড ও কাঁদানে গ্যাস ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করে। পৌনে ১২টার দিকে বিক্ষোভকারীরা থানা রোডে অবস্থিত শহর আওয়ামী লীগে কার্যালয়ে হামলা করে।
রাজধানীর পরিবাগে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ২১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মো. আসাদুজ্জামানের কার্যালয়ে আগুন দেওয়া হয়েছে। আজ রোববার বেলা ১২টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
রাজধানীর শাহবাগ মোড়ে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করছেন বিক্ষোভকারীরা। দুপুর ১২টায় এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত সেখানে হাজার বিক্ষোভকারী ছিলেন। আরও মিছিল আসছিল। তাঁরা সরকারের পদত্যাগের দাবিতে নানা স্লোগান দিচ্ছিলেন।
শাহবাগ থানার সামনে পুলিশ অবস্থান নিয়ে আছে। থানার সামনে বিক্ষোভকারীদের একাংশ সেখানে অবস্থান থানার দিকে কাউকে না যাওয়ার অনুরোধ করছেন। মিছিল অন্যদিকে সরিয়ে দেওয়া হচ্ছে।
এর আগে আজ রোববার বেলা ১১টার দিকে শাহবাগ এলাকায় বিক্ষোভকারীরা আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের ধাওয়া দেন। সকাল সাড়ে ১০টার পরে তাঁরা পুরান ঢাকার দিক থেকে মিছিল নিয়ে শাহবাগে আসেন।
সে সময় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) সামনের দিকে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা স্লোগান দিচ্ছিলেন। তবে পুরান ঢাকার দিক থেকে আসা মিছিল থেকে তাঁদের ধাওয়া দেওয়া হয়। তাঁরা হাসপাতালের ভেতরে ঢুকে যান। সেখান থেকে ইটপাটকেল ছোড়া হচ্ছিল। তখন বিক্ষোভকারীরা হাসপাতালের ভেতরে ঢুকে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের খুঁজতে থাকেন। এ সময় হাসপাতালের প্রাঙ্গণে থাকা প্রায় ২০টি গাড়ি ও অ্যাম্বুলেন্স এবং ১৫টির মতো মোটরসাইকেলে ভাঙচুর করা হয়। কয়েকটি মোটরসাইকেলে আগুন দেওয়া হয়।
বেলা সোয়া ১১টার দিকে বিক্ষোভকারীরা হাসপাতালের ভেতর থেকে বেরিয়ে আসার সময় ইটপাটকেল নিক্ষেপ করা হয়। তখন আবার তাঁরা ভাঙচুর শুরু করেন। সাড়ে ১১টার দিকে হাসপাতালের প্রাঙ্গণ থেকে বেরিয়ে যান বিক্ষোভকারীরা। তাঁরা শাহবাগ মোড়ে অবস্থান নেন। সেখানে বিক্ষোভে এক দফা দাবিতে স্লোগান দেওয়া হয়। আরও বলা হয়, ‘আমার ভাই মরল কেন, প্রশাসন জবাব চাই’।
১১ ঘণ্টারও বেশি সময় পর চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কে যান চলাচল শুরু হয়েছে। গতকাল শনিবার দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে মহাসড়কে যান চলাচল শুরু হয়। এর আগে গতকাল বেলা দুইটার দিকে মহাসড়ক অবরোধ করা হয়।
দোহাজারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খান মুহাম্মদ এরফান বলেন, রাত দুইটার পর থেকে মহাসড়কে যান চলাচল শুরু হয়েছে।
লোহাগাড়া উপজেলার অন্তত পাঁচটি জায়গায় দীর্ঘসময় ধরে মহাসড়ক অবরোধ করে রেখেছিলেন আন্দোলনকারীরা। এ সময় চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের এই অংশে অন্তত ১১ ঘণ্টার বেশি সময় ধরে শত শত যানবাহন আটকা পড়ে থাকতে দেখা গেছে।
চট্টগ্রাম নগরের নিউমার্কেট এলাকায় বিক্ষোভকারী–পুলিশ, ছাত্রলীগ ও যুবলীগের সংঘর্ষ চলছে। সকাল থেকে শান্তিপূর্ণভাবে বিক্ষোভ চললেও সোয়া ১১টার দিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মীদের ওপর সিটি কলেজের দিক থেকে হামলা করেন ছাত্রলীগ ও যুবলীগের নেতা–কর্মীরা। এরপর দুপুর ১২টার দিকে পুলিশও বিক্ষোভকারীদের লক্ষ্য করে টিয়ার শেল ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে। সংঘর্ষে অন্তত আট জন আহত হন বলে খবর পাওয়া গেছে।
একই স্থানে আজ বেলা একটায় অবস্থান কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছে আওয়ামী লীগ ও তার অঙ্গ-সহযোগী সংগঠন। বেলা ১১টা পর্যন্ত বিক্ষোভকারীরা শান্তিপূর্ণভাবে বিক্ষোভ করেন। তবে সোয়া ১১টার দিকে সিটি কলেজের সামনের এলাকা থেকে সরকার-সমর্থক একদল যুবক হঠাৎ বিক্ষোভকারীদের ওপর হামলা শুরু করেন। এ সময় গুলির শব্দ শোনা যায়। বেলা ১২টার দিকে ঘটনাস্থলে পুলিশ আসে। এ সময় পুলিশ সাউন্ড গ্রেনেড ও টিয়ার শেল ছুড়ে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করার চেষ্টা করে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকে এক দফা দাবিতে ‘অসহযোগ আন্দোলন’ কর্মসূচির অংশ হিসেবে গাজীপুরের বিভিন্ন এলাকায় শিক্ষার্থীরা জড়ো হচ্ছেন। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার সফিপুর বাজার থেকে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে শত শত শিক্ষার্থী চন্দ্রা ত্রিমোড় এলাকায় যায় এবং মহাসড়কে অবরোধ সৃষ্টি করে। চন্দ্রা ত্রিমোড় এলাকায় উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে অগ্নিসংযোগ করা হয়।
আওয়ামী লীগের নেতা–কর্মীরা চন্দ্রা দলীয় কার্যালয়ে সামনে অবস্থান করলে তাদের ধাওয়া দেওয়া হয়। একপর্যায়ে দলীয় কার্যালয়ে অগ্নিসংযোগ করা হয়। চন্দ্রা ত্রিমোড় এলাকায় পুলিশ বক্স ভাঙচুর করা হয়েছে।
মিরপুর ১০ নম্বর গোলচত্বরে মিরপুর–১৪ নম্বরের সংসদ সদস্য মাইনুল হোসেন নিখিলকে আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতা-কর্মীদের সঙ্গে সমাবেশ করতে দেখা গেছে। রোববার বেলা ১১টার আগে এ সমাবেশ দেখা গেছে। এ সময় তাঁদের অনেকের হাতে লাঠি দেখা যায়। মিরপুর–১০ নম্বরে রাস্তাঘাটে যানবাহন কম চলতে দেখা গেছে।
নারায়ণগঞ্জের কায়েমপুর এলাকায় সকাল নয়টার দিকে অন্তত তিনটি তৈরি পোশাক কারখানায় ভাঙচুর করেছে আন্দোলনকারীরা। পরে এসব কারখানার পাশাপাশি আশপাশের সব কারখানা ছুটি দিতে বাধ্য হয় কর্তৃপক্ষ। বেলা ১১টার দিকে বিসিক শিল্পনগরে দিকে আন্দোলনকারীরা গেলে সেখানকার সব পোশাক কারখানা ছুটি ঘোষণা করে সেখানকার মালিক সমিতি।
নিট পোশাকশিল্প মালিকদের সংগঠন বিকেএমইএর নির্বাহী সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম প্রথম আলোকে বলেন, কায়েমপুর এলাকায় সকালে বহিরাগত লোকজন প্রথমে ইউরোটেক্স কারখানায় হামলা করে শ্রমিকদের বের করে দেয়। পরে শ্রমিকদের একটি অংশ তাদের সঙ্গে যুক্ত হয়। পরে পরিস্থিতি অবনতি হতে থাকলে আমরা বিসিকের সব কারখানা শ্রমিকদের ছুটি দিয়ে দিয়েছি। বিসিকে আড়াই লাখ শ্রমিক কাজ করেন। অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা পুলিশের সহায়তা চেয়েছি। তবে সেভাবে সহায়তা না পাওয়ায় বিসিকের সব কারখানা ছুটি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
মুন্সিগঞ্জে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মসূচি চলাকালে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ, যুবলীগসহ নেতা–কর্মীদের সংঘর্ষ হয়েছে। এতে দুজন গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা গেছেন। আহত হয়েছেন অর্ধশতাধিক। আজ রোববার সকাল পৌনে ১০টা থেকে দুপুর পৌনে ১২টা পর্যন্ত দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
জয়পুরহাট শহরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকে সর্বাত্মক অসহযোগ কর্মসূচি চলছে। রোববার বেলা ১১টার দিকে আন্দোলনকারীরা শহরের নতুনহাট এলাকা থেকে বিক্ষোভ মিছিল শুরু করেন। সেখান থেকে তাঁর আধা কিলোমিটার দূরে জিরো পয়েন্ট পাচুর মোড়ে অবস্থান নেন। বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত আন্দোলনকারীরা সেখানে ছিলেন। তাঁরা সরকার পদত্যাগের এক দফা দাবিতে স্লোগান দেন। এ সময় পাশে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা সতর্ক অবস্থানে ছিলেন।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকে এক দফা দাবিতে চলা অসহযোগ আন্দোলনে রাজধানীর পুরান ঢাকায় পুলিশ ও আন্দোলনকারীদের সংঘর্ষ চলছে। এ সময় ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতের সামনে পুলিশের একটি গাড়িতে আগুন দেওয়া হয়। আজ রোববার সকাল ১১টার পর এ ঘটনা ঘটে।
মুন্সিগঞ্জ শহরে আজ রোববার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সর্বাত্মক অসহযোগ কর্মসূচি ঘিরে সংঘর্ষ শুরু হয়েছে। সকাল পৌনে ১০টার দিকে শহরের সুপারমার্কেট এলাকায় আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আওয়ামী লীগের নেতা–কর্মীদের সংঘর্ষ শুরু হয়। এ সময় দুই পক্ষের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। কয়েকটি মোটরসাইকেল পুড়িয়ে দেওয়া হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ কাদাঁনে গ্যাসের শেল ছোড়ে। এ প্রতিবেদন লেখার সময় বেলা সোয়া ১১টা পর্যন্ত সংঘর্ষ চলছিল।
এক দফা দাবিতে আজ রোববার সারা দেশে অসহযোগ আন্দোলনের ডাক দিয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। এ সময় বেলা ১১টার দিকে শাহবাগ এলাকায় বিক্ষোভকারীরা আওয়ামী লীগের নেতা–কর্মীদের ধাওয়া দেন।
রাজধানীর শাহবাগ মোড়ে লাঠিসোঁটা হাতে শত শত লোক জড়ো হয়েছেন। সকালে সাড়ে ১০টার পরে তাঁরা পুরান ঢাকার দিক থেকে মিছিল নিয়ে শাহবাগে আসেন। সে সময় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) সামনের দিকে আওয়ামী লীগের নেতা–কর্মীরা স্লোগান দিচ্ছিলেন। তবে পুরান ঢাকার দিক থেকে আসা মিছিল থেকে তাঁদের ধাওয়া দেওয়া হয়। তাঁরা হাসপাতালের ভেতরে ঢুকে যান। এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত বেলা ১১টার দিকে সেখানে সংঘর্ষ চলছিল।
সংঘর্ষের সময় হাসপাতালের প্রাঙ্গণে রাখা কয়েকটি গাড়ি ভাঙচুর করা হয়। সে সময় হাসপাতালের ভেতরে আশ্রয় নেওয়া আওয়ামী লীগের নেতা–কর্মীরা ইটপাটকেল ছুড়ছিলেন।
মিছিলের সময় এক দফা দাবিতে স্লোগান দেওয়া হয়। আরও বলা হয়, ‘আমার ভাই মরল কেন, প্রশাসন জবাব চাই’।
এর আগে সকালে শাহবাগ এলাকা দিয়ে দু–তিনজন করে বিক্ষোভকারী যাওয়ার সময় ছাত্রলীগের নেতা–কর্মীরা তাঁদের মারধর করেন। পরে বিক্ষোভকারীরা সংগঠিত হয়ে আসেন। এ সময় শাহবাগ এলাকায় কোনো পুলিশ দেখা যায়নি।
শাহবাগ থানা এলাকায় একটি পুলিশের গাড়িকে বিক্ষোভকারীদের আসতে দেখে সরে যেতে দেখা যায়।
এক দফা দাবিতে আজ রোববার (৪ আগস্ট) সারা দেশে অসহযোগ আন্দোলনের ডাক দিয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। ঘোষিত এ কর্মসূচির প্রভাব রাজধানীর সড়কে দেখা গেছে। তবে স্বাভাবিকের চেয়ে কম দেখা গেছে যানবাহন। যানবাহনের মধ্য রিকশা ও সিএনজিচালিত অটোরিকশা বেশি দেখা গেছে।
গণপরিবহন স্বাভাবিকের চেয়ে কম থাকায় ভোগান্তিতে পড়েছেন অফিসগামী অনেক যাত্রী। বিপাকে হাসপাতালগামী রোগী ও স্বজনেরা।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন সর্বাত্মক অসহযোগের ডাক দেওয়া হয় আজ রোববার। আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক আসিফ মাহমুদ গতকাল শনিবার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে এ বিষয়ে জরুরি নির্দেশনা তুলে ধরেন। এর আগে সরকারের পদত্যাগের এক দফা দাবিতে রোববার থেকে সর্বাত্মক অসহযোগ আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণা করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আরেক সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম। কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে এই ঘোষণা দেওয়া হয়।
সম্পাদক ও প্রকাশক : মোঃ রুহুল আমিন রতন | মোবাঃ ০১৯১৫-০৯১৫২৯ , ০১৮৫৮-৩১০৮৩৫