প্রিন্ট এর তারিখঃ ডিসেম্বর ১৭, ২০২৫, ৭:৩৭ পি.এম || প্রকাশের তারিখঃ আগস্ট ১১, ২০২৫, ৩:০০ অপরাহ্ণ
২০ লাখে প্রভাষক পদ! প্রশাসনের নীরবতায় ফুলে ফেঁপে উঠছে তারাকান্দার নিয়োগ চক্র!

শেখ মামুনুর রশীদ মামুন-বিশেষ প্রতিনিধি:- ময়মনসিংহের তারাকান্দা উপজেলার দুটি বেসরকারি কলেজে শিক্ষক নিয়োগকে ঘিরে এক ভয়াবহ ‘ঘুষ–জালিয়াতি চক্রের’ তথ্য ফাঁস হয়েছে। অনুসন্ধানে উঠে এসেছে—এনটিআরসিএ (NTRCA) নিবন্ধন ছাড়াই, অনুমোদনহীন বিষয়, জাল সনদপত্র, এমনকি ইউএনও ও কর্মকর্তাদের স্বাক্ষর জাল করে নিয়োগপত্র তৈরির মতো অবিশ্বাস্য সব অনিয়ম। অভিযোগের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে—১️.ফজলুল হক চৌধুরী মহিলা কলেজ (EIIN: 104215, কলেজ কোড: 7290) ২️.এন ইসলামিয়া একাডেমি কলেজ। দুই কলেজে ৪৫ জনের বেশি প্রভাষক অবৈধভাবে নিয়োগ পেয়েছেন। প্রতিজন প্রার্থীর কাছ থেকে ১৫–২০ লাখ টাকা পর্যন্ত ঘুষ নেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ। শুধু তাই নয়, ময়মনসিংহ অঞ্চলের শিক্ষা উপ-পরিচালক (ডিডি) পর্যন্ত ৩ লাখ টাকা করে ভাগ পেয়েছেন বলে স্থানীয়দের দাবি। ভিন্ন বিষয়ে পড়েও প্রভাষক পদ: ইতিহাসে পড়া প্রার্থীকে দেওয়া হয়েছে পালি বিভাগের প্রভাষক পদ! মাদ্রাসা ছাত্র হয়েছেন সংগীত বিভাগের প্রভাষক! ছিলেন আয়া—এখন সংস্কৃতি বিভাগের প্রভাষক! রাষ্ট্রবিজ্ঞানে পড়াশোনা— কিন্তু মনোবিজ্ঞানের শিক্ষক! অনুমোদনহীন বিষয়েও নিয়োগ: শিক্ষা অধিদপ্তরের অনুমোদন নেই, তবুও কলেজ কর্তৃপক্ষ নিজেদের মতো বিষয় নির্ধারণ করে শিক্ষক নিয়োগ দিয়েছে। জমির দলিলেও জালিয়াতি: কলেজ স্থাপনের জন্য যে জমির কথা দলিলে রয়েছে, বাস্তবে প্রতিষ্ঠানটি দাঁড়িয়েছে অন্য জায়গায়। নিয়োগ প্রক্রিয়ায় নেই কোনো পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি, নেই ডিসি প্রতিনিধি, নেই বৈধ নিয়োগ বোর্ডের প্রমাণ। বরং কর্মকর্তাদের স্বাক্ষর জাল করে নিয়োগপত্র তৈরির অভিযোগ উঠেছে। ফজলুল হক চৌধুরী মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ হোসেন আলী চৌধুরী— অভিযোগ রয়েছে, তিনি নিজেই এই নিয়োগ বাণিজ্যের হোতা। এন ইসলামিয়া একাডেমি কলেজের চক্রনেতা আনোয়ারুল ইসলাম ও অধক্ষ্য নজরুল ইসলাম — জাল সনদ সরবরাহের মূল ব্যক্তি বলে স্থানীয়দের দাবি। এ ধরনের নিয়োগ জালিয়াতি দণ্ডবিধির ৪৬৮, ৪৭১ এবং দুর্নীতি দমন আইনের ৫ ধারায় গুরুতর অপরাধ। প্রমাণিত হলে ৭–১০ বছরের কারাদণ্ড, সরকারি সুবিধা আত্মসাৎ, জাল দলিল তৈরি ও ব্যবহারসহ একাধিক অভিযোগে দায়ীদের শাস্তি হতে পারে। তারাকান্দা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জাকির হোসাইন জানিয়েছিলেন—"অভিযোগ খতিয়ে দেখা হবে" কিন্তু আজও কোন প্রকার তদন্ত ই হয়নি বলে জানা গেছে। তবে অভিযুক্ত অধ্যক্ষরা প্রকাশ্যে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। স্থানীয় সচেতন নাগরিকরা ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বলেছেন—একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে ঘুষের বাজারে পরিণত করে তরুণ প্রজন্মের ভবিষ্যৎ ধ্বংস করা হচ্ছে। সরকারের জরুরি হস্তক্ষেপ ছাড়া এই চক্র বন্ধ হবে না।"আমাদের দাবিঃজাতীয় স্বার্থে ও শিক্ষার মান রক্ষায়—১. দুদক,শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও জেলা প্রশাসনের জরুরি তদন্ত।২.ভুয়া নিয়োগ বাতিল ৩. দায়ীদের দ্রুত আইনের আওতায় আনা। জাতীয় শিক্ষাব্যবস্থাকে রক্ষা করতে এখনই পদক্ষেপ নিন—না হলে আগামী প্রজন্মকে জবাব দেওয়ার মতো মুখ থাকবে না।
সম্পাদক ও প্রকাশক : মোঃ রুহুল আমিন রতন | মোবাঃ ০১৯১৫-০৯১৫২৯ , ০১৮৫৮-৩১০৮৩৫
© সম্পাদক ও প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত !! Email: [email protected]