
স্টাফ রিপোর্টার, গাজীপুর :: গাজীপুরের কালীগঞ্জ, সদর, কাপাসিয়া ও শ্রীপুর উপজেলায় বিস্তৃত ঐতিহ্যবাহী বেলাই বিলে অবৈধ ভরাট ও দূষণ রোধে হাইকোর্ট স্থিতাবস্থা জারি করেছে। সোমবার (১১ আগস্ট) বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা) কর্তৃক দায়েরকৃত জনস্বার্থ মামলার প্রাথমিক শুনানি শেষে বিচারপতি মো. আকরাম হোসেন চৌধুরী ও বিচারপতি ফয়েজ আহমেদের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন। বেলা এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
আদালত এক রুলে জানতে চেয়েছেন, বেলাই বিল রক্ষায় কর্তৃপক্ষের ব্যর্থতা কেন সংবিধান, প্রচলিত আইন ও বিচারিক সিদ্ধান্তের লঙ্ঘন হিসেবে ঘোষণা করা হবে না। এছাড়া, বিল দখল ও দূষণকারীদের তালিকা প্রণয়ন, উচ্ছেদ, ক্ষতিপূরণ আদায় এবং বিলের সীমানা নির্ধারণ করে সংরক্ষণে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না।
হাইকোর্ট নর্থসাউথ গ্রুপ, তেপান্তর, মাহাদী গ্রুপ, আমার বসতি, বাংলা মার্ক লিমিটেড ও অ্যাকুয়া বিলাসসহ বিভিন্ন আবাসন প্রকল্পের ভরাট কার্যক্রমের ওপর আগামী তিন মাসের জন্য স্থিতাবস্থা জারির নির্দেশ দিয়েছেন। এছাড়া রাজউকের চেয়ারম্যান, পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, গাজীপুর জেলা প্রশাসক ও সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের আরএস জরিপ অনুযায়ী বিলের সীমানা নির্ধারণ, দখলদারদের তালিকা প্রণয়ন এবং সময়ভিত্তিক কর্মপরিকল্পনা তৈরি করে তিন মাসের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
আদালত আরও নির্দেশ দিয়েছেন, বিলের আশপাশের প্রতিষ্ঠানগুলোর পরিবেশগত ছাড়পত্রের শর্ত পালন হচ্ছে কি না, তা নিয়মিত তদারকি করতে এবং বেআইনি ভরাটের ফলে বিল ও কৃষিজমির ক্ষতির তদন্ত করে ভবিষ্যতে শ্রেণি পরিবর্তন ঠেকাতে ব্যবস্থা নিতে।
বেলার তথ্যমতে, প্রায় ৫০ বর্গকিলোমিটারের এই বিলকে ‘এক ফসলি জমি’ হিসেবে দেখিয়ে নর্থসাউথ গ্রুপ, তেপান্তর, মাহাদী গ্রুপ, বাংলা মার্ক লিমিটেড, আমার বসতি, ইন্টেলিজেন্ট কার্ড ও প্রাণ কোম্পানি লিমিটেডের মতো প্রতিষ্ঠান অনুমোদন ছাড়াই মাটি ও বালু ভরাট করছে। এছাড়া অ্যাকুয়া বিলাস রিসোর্ট বিলের মাছের অভয়ারণ্যে ভরাট ও কার্যক্রমের মাধ্যমে পানি দূষণ করছে, যার ফলে কচুরিপানা বৃদ্ধি পেয়ে পানির প্রবাহ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে এবং মাছের উৎপাদন হ্রাস পাচ্ছে। বেলার পক্ষে শুনানিতে ছিলেন অ্যাডভোকেট এস. হাসানুল বান্না ও অ্যাডভোকেট তৌহিদুল আলম। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল খাঁন জিয়াউর রহমান।



Discussion about this post