নিজস্ব প্রতিবেদকঃ ময়মনসিংহ সদর উপজেলা প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ আল মামুনের বিরুদ্ধে উঠেছে ভয়াবহ দুর্নীতি, অনিয়ম ও সিন্ডিকেট বাজির অভিযোগ। সরকারি প্রকল্পে নিম্নমানের কাজ, ভুয়া বিল-ভাউচার, অতিরিক্ত কমিশন এবং একচেটিয়া ঠিকাদারি নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে তিনি সদর উপজেলায় “দুর্নীতির দুর্গ” গড়ে তুলেছেন বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। সূত্রমতে, ২০২১ সালের ডিসেম্বরে যোগদানের পর থেকেই তিনি স্থানীয় এলজিইডি (LGED) প্রকল্পগুলো নিজের পছন্দের মুষ্টিমেয় কিছু ঠিকাদারের হাতে তুলে দেন। ফলে রাস্তা, কালভার্ট ও গ্রামীণ অবকাঠামোর অধিকাংশ কাজ চলে যায় সিন্ডিকেটভুক্ত ঠিকাদারদের নিয়ন্ত্রণে। অন্য ঠিকাদাররা কার্যত বঞ্চিত হন।
সিন্ডিকেটের ভয়াবহ চিত্রঃ অভিযোগ রয়েছে, অতিরিক্ত কমিশনের চাপ সামলাতে এসব ঠিকাদাররা নিম্নমানের উপকরণ ব্যবহার করতে বাধ্য হন। সিরতা, পরানগঞ্জ ও চর নিলক্ষীয়া ইউনিয়নের সাম্প্রতিক প্রকল্পগুলোতে পুরনো সুরকী ও গোবর মিশিয়ে কাজ করার প্রমাণ পাওয়া গেছে। কোথাও রডের পরিবর্তে বাঁশ, কোথাও সিমেন্টের বদলে গোবর—স্থানীয়রা এটিকে দুর্নীতির জঘন্য নজির হিসেবে দেখছেন।
সরকারি অর্থ আত্মসাতঃ জনশ্রুতি বলছে—২০২১ সালের পর থেকে সদর উপজেলার দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জন্য বরাদ্দ সরকারি তহবিল ভুয়া বিল-ভাউচার ও অতিরিক্ত হিসাব দেখিয়ে আত্মসাৎ করা হয়েছে। মূল পরিকল্পনাকারী হিসেবে অভিযুক্ত হচ্ছেন প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ আল মামুন ও তার সিন্ডিকেট। অভিযুক্তের বক্তব্যঃ যোগাযোগ করলে আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন—“অভিযোগগুলো সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন ও কল্পনাপ্রসূত। সব প্রকল্প নিয়ম মেনে হয়েছে। যেকোনো তদন্ত হলে আমি আইনি প্রক্রিয়ায় জবাব দিতে প্রস্তুত।” প্রশাসনের নীরবতা প্রশ্নবিদ্ধ! তবে স্থানীয়রা বলছেন—দুর্নীতিবিরোধী আন্দোলনের সময়ও তিনি ছিলেন ‘নিষ্ক্রিয় দর্শক’। এখনো বহাল তবিয়তে থেকে সিন্ডিকেটের বাণিজ্য চালিয়ে যাচ্ছেন। প্রশ্ন উঠেছে—এতসব গুরুতর অভিযোগ প্রকাশ্যে আসার পরও প্রশাসন তদন্তে নীরব কেন? এটা কি প্রশাসনিক ব্যর্থতা, নাকি দুর্নীতিবাজদের জন্য অবাধ স্বাধীনতার “মগের মুল্লুক”? দুদকের প্রতি আহ্বানঃ সচেতন মহল মনে করছে, উন্নয়ন তহবিল জনগণের কল্যাণে ব্যয় নিশ্চিত করতে হলে দ্রুত দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) হস্তক্ষেপ প্রয়োজন। অন্যথায়, ময়মনসিংহ সদর উপজেলায় উন্নয়ন শুধু কাগুজে প্রকল্পেই সীমাবদ্ধ থাকবে।
সম্পাদক ও প্রকাশক : মোঃ রুহুল আমিন রতন | মোবাঃ ০১৯১৫-০৯১৫২৯ , ০১৮৫৮-৩১০৮৩৫