স্টাফ রিপোর্টার, গাজীপুর :- গাজীপুরের কাপাসিয়ায় ৪৩ কোটি টাকা ব্যয়ে স্থাপিত সৌর বিদ্যুৎচালিত সড়ক বাতিগুলোর ৯০ ভাগই অচল হয়ে পড়েছে। এ সড়ক বাতিগুলোর অনেক জায়গায় খুঁটি থাকলেও লাইট চুরি হয়ে গেছে। কোথাও লাইট থাকলেও প্যানেল গায়েব। কোনো কোনো জায়গায় খুঁটি ও লাইট থাকলেও নেই ব্যাটারি। দিনের পর দিন এ অবস্থা চললেও স্থানীয় প্রশাসন বা জনপ্রতিনিধিদেরও কোনো পদক্ষেপ নিতে দেখা যাচ্ছে না। রাস্তার পাশে স্থাপন করা এসব সৌরবাতির দেখভালের দায়িত্ব কার– এমন প্রশ্ন এখন স্থানীয় মানুষের।
বিষয়টি স্বীকার করে কাপাসিয়া উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. মশিউর রহমান জানান, গ্রামীণ মানুষের রাতে নির্বিঘ্নে চলাচলের জন্য এটি খুবই উপকারী একটি প্রকল্প ছিল। কিন্তু প্রকল্পটির কাজ এখন বন্ধ রয়েছে। যেসব ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে সড়কবাতিগুলো স্থাপন করা হয়েছিল, তাদের চুক্তির মেয়াদও ইতোমধ্যে শেষ হয়ে গেছে। বর্তমানে রক্ষণাবেক্ষণ ও মেরামতে বরাদ্দ না থাকায় আপাতত কিছুই করা সম্ভব হচ্ছে না। তিনি বলেন, বরাদ্দ পাওয়া সাপেক্ষে পরবর্তী সময়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
রাতের অন্ধকারে ভয়:
অভিযোগ রয়েছে, সড়কবাতি স্থাপনের পর থেকে তিন বছর পর্যন্ত তদারকির কথা থাকলেও ঠিকমতো দায়িত্ব পালন করেনি সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো। প্রয়োজনীয় রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে বিপুল ব্যয়ের এসব সৌরবাতির বেশির ভাগই স্থানীয় জনগণের কোনো উপকারে আসছে না। রাতে অন্ধকারে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে হাজার হাজার মানুষকে। বেড়েছে চুরি ছিনতাইয়ের মতো ঘটনা।
ঘাগটিয়া চালা বাজারের একজন ব্যবসায়ী জানান, কয়েকদিন আগে রাতে এ বাজার-সংলগ্ন সেতুর পূর্বপাশে একটি ওষুধ কোম্পানির কাভার্ডভ্যান আটকে বিক্রয় প্রতিনিধিকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে টাকা ছিনিয়ে নেয় দুর্বৃত্তরা। এখানে একটি সড়কবাতি স্থাপন করা হলেও তা বেশিদিন সচল ছিল না।
চালা বাজার থেকে আড়ালিয়া সড়কে চলাচলকারী বেশ কয়েকজন অটোরিকশা চালক জানান, ঝুঁকিপূর্ণ জায়গাগুলোতে সড়কবাতি থাকাকালে গভীর রাত পর্যন্ত যাত্রীদের বিভিন্ন গন্তব্যে পৌঁছে দিতেন। এখন তারা ভয় পান। প্রায়ই মাদকাসক্ত ও ছিনতাইকারীরা এ সড়কে রিকশা আটকে টাকাপয়সা নিয়ে যায়। অনেক সময় চালককে মারধর ও অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে রিকশাও নিয়ে যায়। তাই সন্ধ্যার পর এই সড়কে রিকশা চালাতে তারা ভয় পান।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের গ্রামীণ অবকাঠামো সংস্কার ও রক্ষণাবেক্ষণ কর্মসূচির আওতায় উপজেলার ১১টি ইউনিয়নে স্থাপন করা হয় ৭৪৬টি সৌরবাতি। টিআর-কাবিখা বরাদ্দের মাধ্যমে গ্রামীণ হাটবাজার ও গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা, মসজিদ, মন্দির, স্কুল, কলেজসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সামনে এগুলো স্থাপন করা হয়।
সম্পাদক ও প্রকাশক : মোঃ রুহুল আমিন রতন | মোবাঃ ০১৯১৫-০৯১৫২৯ , ০১৮৫৮-৩১০৮৩৫