
দৈনিক আমাদের সংবাদ ডেস্ক :: আসন্ন শারদীয় দুর্গাপূজাকে সামনে রেখে সার্বিক প্রস্তুতি ও নিরাপত্তা পরিস্থিতি পর্যালোচনা করতে পূজা উদযাপন পরিষদ ও বিভিন্ন ধর্মীয় সংগঠনের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস। সোমবার বিকেলে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “পূজা উপলক্ষে আপনাদের সঙ্গে বছরে অন্তত একবার দেখা করার সুযোগ হয়। এই উৎসবকে কেন্দ্র করে আমরা সবাই মিলেমিশে কাজ করতে চাই।”
পূজা উদযাপন পরিষদের নেতারা জানান, গত বছরের তুলনায় এ বছর সারাদেশে এক হাজারের বেশি পূজামণ্ডপ বেড়েছে। মণ্ডপ সাজানোর কাজ ইতিমধ্যেই পুরোদমে চলছে। তারা বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে এবারের পূজায় সর্বোচ্চ সহযোগিতা করা হচ্ছে। বিশেষ করে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ও সচিবকে ধন্যবাদ জানান তারা।
ঢাকা মহানগর পূজা কমিটির সভাপতি জয়ন্ত কুমার দেব প্রধান উপদেষ্টাকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, রেল মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে স্থায়ী দুর্গামন্দিরের জন্য জায়গা বরাদ্দ দেওয়া একটি ঐতিহাসিক ঘটনা। এছাড়া এবারের পূজায় দুই দিনের সরকারি ছুটি এবং প্রধান উপদেষ্টার নিয়মিত খোঁজখবর নেওয়া সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বিশেষ অনুপ্রেরণা জুগিয়েছে।
বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি বাসুদেব ধর বলেন, “আপনি গত বছর ঢাকেশ্বরী মন্দির পরিদর্শনে এসে বলেছিলেন—কড়া নিরাপত্তায় নয়, সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে পূজা হোক। এটি কোনো সরকারপ্রধানের কাছ থেকে আমাদের জন্য অভূতপূর্ব বার্তা।”
বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান কল্যাণ ফ্রন্টের মহাসচিব এস এন তরুণ দে বলেন, প্রধান উপদেষ্টার নেতৃত্বে দেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির নজির স্থাপিত হয়েছে। তিনি আশা প্রকাশ করেন, মিথ্যা প্রচারণা ও ফেইক নিউজের বিরুদ্ধে সরকারের কার্যকর ভূমিকা থাকবে।
ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন বৈঠকে জানান, ধর্ম মন্ত্রণালয় সব ধর্মের প্রতিনিধিত্ব করছে। অসচ্ছল মন্দির, প্যাগোডা, গির্জা ও অনাথ আশ্রমগুলোর জন্য সহায়তা দেওয়া হচ্ছে। এছাড়া সুনামগঞ্জের তাহিরপুরে একটি মন্দির ও অন্য মন্দিরে স্নানাগারের জন্য সিঁড়ি নির্মাণের কাজ চলছে।
প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস সকলকে অগ্রিম পূজার শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেন, “এই উৎসবকে কেন্দ্র করে যেন কোনো ধরনের ষড়যন্ত্রের সুযোগ তৈরি না হয়, সবাইকে সজাগ থাকতে হবে।”
বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন— প্রাথমিক ও গণশিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার, হিন্দু ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের ভাইস চেয়ারম্যান তপন চন্দ্র মজুমদার, সচিব দেবেন্দ্র নাথ উঁরাও, রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের অধ্যক্ষ স্বামী পূর্ণাআনন্দ, জাতীয় হিন্দু সমাজ সংস্কার সমিতির সভাপতি অধ্যাপক হীরেন্দ্রনাথ বিশ্বাসসহ পূজা উদযাপন পরিষদ ও অন্যান্য সংগঠনের শীর্ষ নেতারা।



Discussion about this post