প্রিন্ট এর তারিখঃ ডিসেম্বর ১৫, ২০২৫, ১:৪৮ পি.এম || প্রকাশের তারিখঃ সেপ্টেম্বর ২৩, ২০২৫, ৩:১৪ অপরাহ্ণ
ঝিনাইদহ সদর থানায় কেশবপুর গ্রামের আলোচিত ব্যবসায়ী তোয়াজ উদ্দিন হত্যাকাণ্ডের রহস্য উন্মোচন ও আসামি গ্রেফতার

বিশেষ প্রতিনিধি মোঃ ফজলুল কবির গামা:- ঝিনাইদহ সদর থানাধীন মহারাজপুর ইউনিয়নে কেশবপুর গ্রামের তোয়াজ (৫৫) এর ঘর থেকে দুর্গন্ধ আসলে, তার বাড়ির লোকজন পুলিশকে সংবাদ দেয়। ঝিনাইদহ সদর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে গত ০৩/০৯/২০২৫ ইং তারিখ বিকাল আনুমানিক ৫.০০ ঘটিকার সময় ঘরের তালা ভেঙে ঘরের ভিতরে প্রবেশ করে। ভিকটিম তোয়াজ আলী এর দুই পা বাধা অবস্থায় অর্ধগলিত মৃতদেহ তোষক দিয়ে ঢাকা অবস্থায় উদ্ধার করে পুলিশ। ওই সময় তার মাথায় ও শরীরে আঘাতের চিহ্ন পরিলক্ষিত হয়। তোয়াজ আলীর ব্যবহৃত বালিশ ও তোষকে রক্তের শুকনো দাগ দেখা যায়। এছাড়া ভিকটিমের ঘরের দেয়ালে তাকে মারার কারণ হিসেবে "সে মুহাম্মদ (সা:) কে গালি দিছে তার নামে খারাপ কথা বলেছে, আল্লাহু আকবার।"- এই কথা উল্লেখ আছে। ইং ০১/০৯/২০২৫ তারিখ সকাল অনুমান ০৮:০০ ঘটিকার পর হতে ইং ০৩/০৯/২০২৫ তারিখ দুপুর আনুমানিক ৩.৩০ ঘটিকা পূর্বে যে কোন সময় অজ্ঞাতনামা আসামি বা আসামীর মৃত ভিক্টিম তয়াজ আলীকে হত্যা করে লাশ গুম করার জন্য ঘরের দরজা এবং মূল গেটের বাইরে তালা দিয়ে পালিয়ে যায় বলে ধারণা করা হচ্ছিল। হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে তার ভাই মোঃ আক্কাস আলী বাদী হয়ে ঝিনাইদহ সদর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। ঝিনাইদহ সদর থানার পুলিশ পরিদর্শক (নি:) মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম কে মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়। উক্ত হত্যার ঘটনা বিভিন্ন গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফলাও করে প্রচার হলে এলাকার জনমনে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। পুলিশ সুপার, ঝিনাইদহ মহোদয় তাৎক্ষণিক হত্যার মূল রহস্য উদঘাটন সংশ্লিষ্ট আসামিদের গ্রেফতারের জন্য সদর থানা পুলিশকে নির্দেশ প্রদান করেন ও সাইবার ক্রাইম ইন্ডাস্ট্রিগেশন সেল, ঝিনাইদহের টিমকে ঘটনাস্থলে প্রেরণ করেন। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল), ঝিনাইদহ হত্যা মামলার ইনভেস্টিগেটিং অফিসার, সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন সেল কে সার্বক্ষণিক মনিটরিং ও নির্দেশনা প্রদান করতে থাকে। তারই ধারাবাহিকতায় হত্যার ঘটনা সংক্রান্তের পূর্ণাঙ্গ তথ্য সংগ্রহ করে। প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে ঝিনাইদহ সদর থানার ও সাইবার ক্রাইম ইন্ডাস্ট্রিগেশন সেল, দিদি ঝিনাইদহের একটি চৌকস টিম গতকাল ২২/০৯/২৫ তারিখ দুপুর ১২.৩০ ঘটিকার সময় খুলনা জেলার বোটিয়াঘাটা থানা এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে হত্যাকান্ডের মূল আসামি (১৮), পিতা-মোঃ আবুল কালাম আজাদ, সাং-কামারগন্যা, থানা-কোতয়ালী, জেলা- যশোরকে গ্রেফতার করে এবং তার স্বীকারোক্তি মোতাবেক হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত আলামত একটি প্রাথমিক ছিল হত্যাকাণ্ডের ঘটনার মোটিভ অন্যদিকে প্রবাহিত করার জন্য ভিকটিমের ঘরের দেওয়ালের লেখায় ব্যবহৃত মার্কার পেন উদ্ধার করা হয়। আসামীকে জিজ্ঞাসাবাদে সে জানায়, ২০২২ সালের মৃত্যু তো তোয়াজ উদ্দিন এর সাথে তার পরিচয় হয়। মৃত তোয়াজ উদ্দিনের স্ত্রী, সন্তান না থাকায় তাদের মধ্যে সমকামিতার সম্পর্ক তৈরি হয়। সে বিভিন্ন সময় ভিকটিমের ঢাকার বাসা ও গ্রামের বাড়িতে যাতায়াত করত। গত ইংরেজি ০১/০৯/২০২৫ তারিখ মৃত ভিকটিম তোয়াজ উদ্দিন ও আসামি তানভীর হাসান কেশবপুর গ্রামে ভিকটিমের নিজ বাড়িতে আসে। ওই রাতে মৃত বৃষ্টির তোয়াজ উদ্দিন জোরপূর্ব আসামি তানভীর হাসান এর সাথে অনৈতিক সম্পর্ক ( সমকামিতা) স্থাপন করে বিছানায় শুয়ে থাকে। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে আসামি তানভীর পাশে থাকা শিলপাটা এর শীল পাথর দ্বারা ভিকটিমের মাথায় আঘাত করে তাকে হত্যা করে। তারপর পা বেঁধে রাখে এবং ভিকটিমের ব্যবহৃত মোবাইল ফোন নিয়ে ঘরে বাহির থেকে তালাবদ্ধ করে চাবি পাশের পুকুরে ফেলে আসামি পালিয়ে যায়। যশোর থেকে ভিকটিমের বিকাশ হতে ৪৭৭০/- টাকা উত্তোলন করে মোবাইল ফোনটি ভৈরব নদীতে ফেলে দেয় মর্মে গ্রেফতারকৃত আসামি জানায়। আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণ করলে চাঞ্চল্যকর হত্যাকাণ্ডের বর্ণনা দিয়ে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করে।
সম্পাদক ও প্রকাশক : মোঃ রুহুল আমিন রতন | মোবাঃ ০১৯১৫-০৯১৫২৯ , ০১৮৫৮-৩১০৮৩৫
© সম্পাদক ও প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত !! Email: [email protected]