
স্টাফ রিপোর্টার, গাজীপুর :: গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার কাওরাইদ ইউনিয়নে মাটিকাটা নদীর ওপর নির্মিত চৌধুরীঘাট বেইলি ব্রিজটি নিয়ে জনগণের দুর্ভোগ যেন শেষ হচ্ছে না। শুক্রবার দিবাগত রাতে ব্রিজের পাটাতন ভেঙে স্লিপার নদীতে পড়ে গেছে। এতে ভোগান্তিতে পড়েছে এই সড়কে চলাচলকারী হাজার হাজার কারখানার শ্রমিকসহ সাধারণ যাত্রীরা। বন্ধ হয়ে গেছে জৈনা বাজার টু কাওরাইদ সংযোগ সড়ক। এ নিয়ে ২৮ বারের মতো ভাঙল ব্রিজটি। আজ শনিবার সকালে সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, বেইলি ব্রিজের উত্তর পাশের প্রবেশমুখের সবগুলো স্টিলের স্লিপার খুলে গেছে। একটি স্লিপার খুলে নদীতে পড়ে গেছে। ব্রিজের পাটাতন ভেঙে পড়ে আছে নিচে। তাতে সড়কে অনেক পরিবহন আটকা পড়েছে।
এর আগেও এই ব্রিজটি ২৭ দফায় ভেঙে যাওয়ার ঘটনা ঘটে। তার পরেও স্থায়ী সমাধান বা নতুন একটি ব্রিজ নির্মাণের কোনো উদ্যোগ নেয়নি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। জোড়াতালি দিয়ে মেরামত করে ঝুঁকি নিয়ে যাত্রীরা কাজ সেরেছে। এখন ১৫ কিলোমিটার ঘুরে বিকল্প পথে যাতায়াত করছে ছোট ছোট পরিবহনগুলো। আটকা পড়েছে শত-শত বাস। এই সড়ক দিয়েই চলাচল করেন পার্শ্ববর্তী গফরগাঁও, ভালুকা উপজেলার হাজার হাজার শ্রমিক।
স্থানীয় বাসিন্দা মনির হোসেন বলেন, শুক্রবার দিবাগত রাতের কোনো এক সময় বেইলি ব্রিজের দুটি স্লিপার ভেঙে যায়। একটি স্লিপার খুলে মাটিকাটা নদীতে পড়ে গেছে। সকাল থেকেই শত-শত গাড়ি আটকা পড়েছে। যাত্রীরা ঝুঁকি নিয়ে হেঁটে ব্রিজ পার হয়ে কর্মস্থলে যাচ্ছে। পরিবহনের অনেক সংকট। এই ব্রিজ আর কতবার ভাঙলে স্থায়ী সমাধান হবে?সোনাব গ্রামের বাসিন্দা রনি মিয়া বলেন, এর আগেও এই ব্রিজ বহুবার ভেঙেছে। এবার স্লিপার খুলে নদীতে পড়েছে। দুবার গাড়ি নদীতে পড়েছে, তবু ব্রিজের কাজ হচ্ছে না।
সিএনজি অটোচালক ফরিদ শেখ বলেন, সকালে কাওরাইদ বাসস্ট্যান্ড থেকে যাত্রী নিয়ে এসে দেখি ব্রিজ ভাঙা। পেছনে বহু গাড়ি, তাই পেছনেও যেতে পরছি না। আটকা পড়ে আছি ব্রিজে। এই ব্রিজ অচল হয়ে যাওয়ায় ১৫ কিলোমিটার ঘুরে আমাদের চলাচল করতে হবে। কিন্তু ওই সড়কের অবস্থাও বেশি ভালো না। কয়েক দিন পরপর ভোগান্তি হয়। তবু এর সমাধান মিলছে না।
কাওরাইদ ইউনিয়ন পরিষদের প্রশাসক মো. মাহবুবুল আলম বলেন, বেইলি ব্রিজ দিয়ে শ্রীপুরসহ পার্শ্ববর্তী গফরগাঁও ও ভালুকা উপজেলার হাজার হাজার মানুষ প্রতিদিন চলাচল করে। ব্রিজটি এর আগেও অনেকবার দেবে যায়। এবার পুরোপুরি ভেঙে গেল। মেরামতের জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে অবহিত করা হয়েছে।
শ্রীপুর উপজেলা এলজিইডি প্রকৌশলী মো. তাওহীদ আহমেদ বলেন, বিষয়টি আপনার মাধ্যমে অবগত হয়েছি। দ্রুত সময়ের মধ্যে বেইলি ব্রিজটি মেরামত করে স্বাভাবিক যান চলাচলের ব্যবস্থা করা হবে। শ্রীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সজীব আহমেদ বলেন, নদীতে নতুন ব্রিজ নির্মাণের সব কার্যক্রম সম্পন্ন থাকলেও জমি অধিগ্রহণ জটিলতায় নির্মাণকাজ আটকে আছে।



Discussion about this post