
নিজস্ব প্রতিনিধি :- গাজীপুরের শিমুলতলী এলাকায় বাণিজ্য মেলারআড়ালে চলছে লটারি প্রতারণা। প্রবেশমূল্যের নামেপ্রত্যেক দর্শনার্থীর কাছ থেকে নেওয়া হয়েছে ২০টাকা। সেই টিকিট দিয়ে ‘লটারি কুপন’ বলে দাবিকরে বড় পুরস্কারের লোভ দেখানো হলেও শেষপর্যন্ত কেউই পুরস্কার পাচ্ছেন না। ফলে সবচেয়েবেশি প্রতারিত হ”েছন খেটে খাওয়া সাধারণ মানুষ।
স্থানীয় কয়েকজন অভিযোগ করে বলেন,বাণিজ্য ও কুটির শিল্প মেলা নাম দেওয়া হলেও এটির মূল উদ্দেশ্য লটারি। প্রতিদিন শতাধিক অটোরিকশা দিয়ে মহানগরীর বিভিন্ন এলাকায় হাজার হাজার লটারি বিক্রি করা হচ্ছে কিন্তু বাস্তব চিত্র ভিন্ন। লটারি যাঁরা পাচ্ছেন তাঁরা মেলার কর্তৃপক্ষের সাজানো লোকজন। দিনমজুর, রিকশাচালকসহ নিম্ন আয়ের মানুষ স্বল্প টাকার বিনিময়ে ভাগ্য ফেরানোর আশায় কুপন কিনলেও খালি হাতে ফিরতে হচ্ছে তাঁদের। এলাকার কয়েকজন বাসিন্দার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গাজীপুরে ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প মেলা বসানো হলেও লটারির নামে পরিচিতি পেয়েছে। র্যাফল ড্রয়ের নামে মোটরসাইকেল, স্বর্ণ, ল্যাপটপ, টিভি, ফ্রিজ, ডিনার সেটসহ বিভিন্ন পুরস্কারের প্রলোভন দেখিয়ে বিক্রি হচ্ছে বিপুলসংখ্যক টিকিট। এসব টিকিট বিক্রির জন্য টার্গেট করা হয়েছে খেটে খাওয়া মানুষদের। রিকশাচালক ও দিনমজুর শ্রেণির লোকজন অনেকে র্যাফল ড্রয়ে আসক্ত হয়ে পড়ছেন। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন এসব খেটে খাওয়া লোকজন। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত ২৭ আগস্ট বাংলাদেশ মেশিন টুলস ফ্যাক্টরির পক্ষে একটি অবহিতকরণ চিঠি বিতরণ করা হয়। চিঠিতে বিএমটিএফ লিমিটেড আর্মি ফার্মা ফ্যাক্টরির নির্ধারিত ফাঁকাস্থানে ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প মেলা আয়োজনের বিষয়টি জানানো হয়। বেনারসি ইভেন্ট ম্যানেজমেন্টের স্বত্বাধিকারী বাদল মিয়া ‘ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প’ মেলার আয়োজন করে। এই মেলার বিষয়ে আপত্তি জানিয়ে ডুয়েট সচেতন শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে গত ২১ সেপ্টেম্বর গাজীপুর জেলা প্রশাসক বরারব একটি স্মারকলিপি প্রদান করা হয়। স্মারকলিপিতে আর্মি ফার্মা মাঠে অনুষ্ঠিত মেলায় শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি প্রসঙ্গে ব্যব¯’া গ্রহণের আবেদন জানানো হয়। আবেদনে কয়েকটি সমস্যার কথা তুলে ধরে চার দফা দাবি উপ¯’াপন করা হয়। ¯’ানীয় লোকজন বলেন, মহানগরীর শিমুলতলী এলাকায় সেনানিবাসের কাছে বিএমটিএফ লিমিটেড আর্মি ফার্মা ফ্যাক্টরির জন্য নির্ধারিত ¯’ানে আয়োজিত ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প মেলার আয়োজন করা হয়। মেলাটি মূলত নামকাওয়াস্তে হলেও এর আড়ালে রয়েছে লটারি-বাণিজ্য। গাজীপুর প্রশাসনের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ‘মেলা পরিপত্র অনুযায়ী জেলা ও মহানগর এলাকায় এক মাসের জন্য মেলার অনুমতি দিতে পারেন জেলা প্রশাসক। কিš‘ এ মেলা আয়োজনের জন্য অনুমতির চেয়ে জেলা প্রশাসক বরাবর কোনো আবেদনই করেনি কর্ত…পক্ষ। তারা একটি অবহিতকরণ চিঠি দিয়েছে। চিঠি পাওয়ার পর অননুমোদিত মেলা বন্ধ করার জন্য আমরা মহানগর পুলিশকে অনুরোধ জানিয়ে চিঠি দিয়েছি। ওই মেলার বিষয়ে পার্শ্ববর্তী ডুয়েটের শিক্ষার্থীরাও আপত্তি জানিয়ে জেলা প্রশাসক বরাবরে স্মারকলিপি দিয়েছেন।’ এ বিষয়ে মেলা আয়োজকদের একজন মো. মাহমুদ দাবি করে বলেন, ‘আমরা জেলা প্রশাসক ও পুলিশের কাছ থেকে অনুমতি নিয়েছি।’ তবে গাজীপুরের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট সালমা খাতুন সাংবাদিকদের বলেন, জেলা প্রশাসকের কাছে কেউ কোনো আবেদন করেনি, তাই মেলা আয়োজনের অনুমতি দেওয়ার প্রশ্ন অবান্তর। গাজীপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মেহেদী হাসান বলেন, ‘মেলার অনুমতির জন্য আমাদের কাছে কেউ আবেদন করেনি। তাই আমরা কোনো অনুমতি দিইনি।’



Discussion about this post