
বশিরুল আলম,আলমডাঙ্গা (চুয়াডাঙ্গা) প্রতিনিধিঃ চুয়াডাঙ্গা জেলার আলমডাঙ্গা উপজেলার আসাননগর এলাকায় অবস্থিত আল-আমিন সোসাইটি মডেল মাদ্রাসা-তে অনুষ্ঠিত হয়েছে এক ব্যতিক্রমধর্মী ও অনুপ্রেরণামূলক অভিভাবক সমাবেশ ও মেধাবী শিক্ষার্থীদের পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠান।
বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) সকাল ১০টার সময় মাদ্রাসার নিজস্ব হলরুমে এই সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এতে অভিভাবক, শিক্ষক, পরিচালনা পরিষদ ও স্থানীয় সমাজসেবকরা উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আলমডাঙ্গা উপজেলা জামায়াতে ইসলামী আমির ও মাদ্রাসার সভাপতি প্রভাষক মোঃ শফিউল আলম বকুল। তিনি বলেন—
“আমাদের প্রধান লক্ষ্য হলো শিক্ষার্থীদের কুরআন শিক্ষা ও হিফজ করানো। আমরা কোনো ব্যবসা করছি না; সমাজ ও পরকালের কল্যাণে কাজ করছি। এই মাদ্রাসা ব্যক্তিগত নয়, এটি একটি ইসলামিক সংগঠনের উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত সমাজসেবামূলক প্রতিষ্ঠান।”
তিনি আরও বলেন, “আমাদের এখানে নিম্ন ও মধ্যবিত্ত পরিবারের শিশুরা পড়াশোনা করে। প্রতি মাসে প্রায় ৪০ থেকে ৪৫ হাজার টাকা ভর্তুকি দিতে হয়। তবুও আমরা কোনো বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে নয়, বরং আল্লাহর সন্তুষ্টি ও দেশের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে সঠিক ইসলামী শিক্ষায় গড়ে তোলার লক্ষ্যেই এই মাদ্রাসা পরিচালনা করছি।”
অভিভাবকদের উদ্দেশে তিনি আহ্বান জানান—
“আপনাদের সন্তান আমাদের কাছে অমূল্য আমানত। তাই সময়মতো তাদের মাদ্রাসায় পাঠান এবং খাবার বাবদ নির্ধারিত বেতন যথাসময়ে পরিশোধ করুন। বর্তমানে আমাদের তিনজন অভিজ্ঞ হাফেজ শিক্ষক পাঠদান করছেন; ইনশাআল্লাহ অচিরেই আপনার সন্তানরা পূর্ণাঙ্গ হাফেজ হয়ে উঠবে।”
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পরিচালনা পরিষদের সদস্য ইউসুফ আলী মাস্টার ও আশাদুল হক বিশ্বাস (আমির, কালিদাসপুর ইউনিয়ন জামায়াতে ইসলামী)।
অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন মাদ্রাসার পরিচালক হাফেজ মাওলানা মুফতি গোলাম মুকতাদির।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, আল-আমিন সোসাইটি মডেল মাদ্রাসা শুধু ধর্মীয় শিক্ষায় নয়, সাধারণ শিক্ষাতেও সমানভাবে সাফল্য অর্জন করছে। এখানকার শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন কুরআন তেলাওয়াত, হিফজ প্রতিযোগিতা, ইসলামী বক্তৃতা ও সাধারণ জ্ঞানভিত্তিক প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে পুরস্কার অর্জন করেছে, যা প্রতিষ্ঠানটির সুনামকে আরও উজ্জ্বল করেছে।
অনুষ্ঠানে সারা বছর মনোযোগী, আদর্শ আচরণসম্পন্ন ও পরীক্ষায় ভালো ফলাফল অর্জনকারী শিক্ষার্থীদের পুরস্কৃত করা হয়। মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে তাদের হাতে বই ও ইসলামিক উপহার তুলে দেওয়া হয়। মঞ্চে টানানো ব্যানারে লেখা ছিল—“হে অভিভাবকবৃন্দ, আপনাদের আগমন বরকতময় হোক” এবং “সন্তানদের আদব শেখাও ও উন্নত দীক্ষা দাও”— যা পুরো পরিবেশকে ইসলামি আদর্শে পরিপূর্ণ এক আবেগঘন আবহে পরিণত করে।
মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ জানান, ইসলামিক মানবতার আলোকে আল-আমিন সোসাইটি মডেল মাদ্রাসা নৈতিক, চারিত্রিক ও ধর্মীয়ভাবে যোগ্য নাগরিক হিসেবে ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে গড়ে তুলতে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।



Discussion about this post