
বশিরুল আলম, আলমডাঙ্গা (চুয়াডাঙ্গা) :- আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চুয়াডাঙ্গা-১ আসনে বিজয় নিশ্চিত করতে মাঠপর্যায়ে সংগঠনকে আরও গতিশীল ও ঐক্যবদ্ধ করার বার্তা দিলেন বিএনপি মনোনীত ধানের শীষের প্রার্থী ও জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শরীফুজ্জামান শরীফ। বুধবার বেলা ১১টায় চুয়াডাঙ্গা জেলা চেম্বার অব কমার্স ভবনে সদর উপজেলা ও পৌর বিএনপির যৌথ উদ্যোগে অনুষ্ঠিত এক মতবিনিময় সভায় তিনি নির্বাচনকেন্দ্রিক কৌশল ও সাংগঠনিক শক্তি বৃদ্ধি নিয়ে বিস্তারিত দিকনির্দেশনা প্রদান করেন। সভায় সদর উপজেলার প্রতিটি ইউনিয়ন ও পৌরসভার ওয়ার্ড থেকে বিপুলসংখ্যক নেতা-কর্মীর উপস্থিতি প্রমাণ করে—বিএনপি এখন নির্বাচনকে সামনে রেখে সুসংগঠিত ও প্রস্তুত। সভার সভাপতিত্ব করেন চুয়াডাঙ্গা পৌর বিএনপির সভাপতি সিরাজুল ইসলাম মনির এবং সঞ্চালনা করেন পৌর বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক সোহেল মালিক সুজন। পবিত্র কুরআন তিলাওয়াত করেন সদর উপজেলা ওলামা দলের আহ্বায়ক রাকিবুল ইসলাম। বক্তব্যের শুরুতে অতীত আন্দোলন-সংগ্রামে নিবেদিত নেতা-কর্মীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে শরীফুজ্জামান শরীফ বলেন— “ফ্যাসিস্ট সরকারের সময় যখন মানুষ বিএনপির খাতায় নাম লেখাতে ভয় পেয়েছে, ঠিক সেই কঠিন সময়ে আপনারা সাহসিকতার সঙ্গে দলে যুক্ত হয়েছেন। আপনাদের এই দায়বদ্ধতাই আজকের আমাদের শক্তি।” তিনি জানান, আগামী ফেব্রুয়ারির নির্বাচন কঠিন চ্যালেঞ্জের হলেও ঐক্যবদ্ধ শক্তিই বিজয় এনে দিতে পারে। শরীফুজ্জামান শরীফ মাঠপর্যায়ে নেতা-কর্মীদের জন্য কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ করণীয় তুলে ধরেন— প্রাক্তন ও অসুস্থ নেতাদের বাড়িতে গিয়ে যোগাযোগ করতে হবে মারা যাওয়া নেতাদের পরিবারের খোঁজ নিতে হবে বিএনপির প্রতি যারা দূরত্বে আছেন—তাদের ভোট অর্জনে বাড়ি বাড়ি যেতে হবে টিসিবি কার্ড, চাল–ডাল বা সারের মতো সুবিধা বিতরণে কোনো রাজনৈতিক সম্পৃক্ততা রাখা যাবে না কৃষকের অধিকার ও সমস্যা নিয়ে পাশে দাঁড়াতে হবে তিনি স্পষ্টভাবে বলেন— “আমাদের নিজের ভোট তো আমরা পাবোই। কিন্তু যে ভোট আমাদের নয়, সেই ভোট অর্জন করতে হবে। যারা মিছিলে আসে, মিটিংয়ে আসে—তাদের কাছে ভোট চাওয়া আসলে নির্বাচন করা নয়। সমাজের সবার কাছে যেতে হবে।”তিনি আরও বলেন, “মহিলা কর্মীদের দিয়ে ছোট ছোট টিম গঠন করুন। প্রতিটি বাড়িতে ১০–১৫ মিনিট সময় দিন। কথা বলুন, গল্প করুন—তাহলেই বোঝা যাবে বাড়ির ভোট আপনার দিকে আছে কি না।” হ্যান্ডবিল বিতরণ করে চলে গেলে হবে না, ভোটারদের যুক্তি–তথ্য দিয়ে বোঝাতে হবে—কেন ধানের শীষে ভোট দেওয়া জরুরি। সভায় আমন্ত্রিত ৬০০ নেতা-কর্মীকে তিনি নির্দেশনা দেন—“নির্বাচন পর্যন্ত প্রতিদিন প্রত্যেকে একটি করে নতুন ভোট নিশ্চিত করবেন—নিজেদের ভেতরের ভোট নয়, যারা আমাদের দেবে না বলে মনে হয়—তাদের মধ্য থেকে ভোট এনে দিতে হবে।”সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন—খন্দকার আব্দুল জব্বার সোনা, সফিকুল ইসলাম পিটু, নজরুল ইসলাম নজু, মনিরুজ্জামান লিপটন, মাহমুদুল হক পল্টু, রেজাউল করিম মুকুট, নাজমুল হক স্বপন, এম আর মুকুল, আবুল কালাম আজাদ, হাফিজুর রহমান মুক্ত, মাহাবুব হক মহাবুবসহ জেলা–সদর–পৌর পর্যায়ের শীর্ষ নেতারা।এছাড়াও জেলা মহিলা দল, যুবদল, ছাত্রদল, কৃষক দল, মৎস্যজীবী দল, জাসাস, ওলামা দলসহ বিভিন্ন সহযোগী সংগঠনের সভাপতি–সম্পাদকরা উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন ও নির্বাচনী প্রস্তুতি জোরদারের আহ্বান জানান।ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যায়ের শতাধিক নেতার উপস্থিতি সভাটিকে পরিণত করে শক্তিশালী গণসমাবেশে। সভা শেষে নেতা-কর্মীরা জানান, শরীফুজ্জামান শরীফের নির্দেশিত পরিকল্পনা অনুযায়ী সার্বিক প্রচারণা ও ভোট সংগ্রহ কার্যক্রম আরও বেগবান হবে। মাঠে–ময়দানের নেতা-কর্মীদের উপস্থিতি ও উৎসাহ দেখে তারা আশাবাদী—চূড়ান্ত বিজয় অর্জনে চুয়াডাঙ্গা সদর ও পৌর বিএনপি এবার সর্বোচ্চ ভূমিকা রাখবে।



Discussion about this post