
নিজস্ব প্রতিবেদক : ঢাকা জেলার স্থানীয় বাসিন্দা অফিস সহকারী কাম-কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিক মোঃ জহিরুল ইসলামের বিরুদ্ধে ভুয়া ঠিকানা ব্যবহার, তথ্য গোপন, প্রতারণা ও নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগ এনে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)-এ লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন ইনকিলাব মঞ্চের মো: মোহসিন খান। অভিযুক্ত কর্মকর্তা বর্তমানে ঢাকা জেলার সাভার উপজেলা পরিষদে দায়িত্ব পালন করছেন বলে জানা যায় এবং লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানাগেছে ।
নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অনিয়মের অভিযোগ
দাখিলকৃত অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়, ২০১৭ সালের ২৮ মার্চ জেলা প্রশাসকের কার্যালয়, ঢাকা এবং অধীনস্থ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের দপ্তরে তৃতীয় শ্রেণির বিভিন্ন পদে ৩০ জনকে নিয়োগ দেওয়া হয়। তাদের মধ্যে একজন হিসেবে মোঃ জহিরুল ইসলামও তালিকাভুক্ত হন এবং ২০১৮ সালের ২৮ মে ঢাকা জেলার সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ে যোগদানের নির্দেশ পান। তবে অভিযোগে বলা হয়, তিনি নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ শর্ত—ঢাকা জেলার স্থায়ী বাসিন্দা—এই শর্ত পূরণ করেননি, তবুও তিনি ভুয়া ঠিকানা ব্যবহার করে সরকারি চাকরিতে যোগদান করেন।
অভিযুক্ত ভুয়া ঠিকানা ব্যবহার করেছেন স্থানীয়দের দাবি। অভিযোগকারীরা জানান, জহিরুল ইসলাম নিয়োগের সময় নিজের স্থায়ী ঠিকানা হিসেবে উল্লেখ করেন—৩৯, বারিধারা সোসাইটি, গুলশান-বাড্ডা, ঢাকাু১২১২। কিন্তু স্থানীয়দের দাবি, তিনি কখনোই ওই ঠিকানায় বসবাস করেননি।তারা আরও জানান—তার পরিবার বা আত্মীয়দের কেউ ওই এলাকায় বসবাস করেন না। স্থানীয় বাসিন্দারা তাকে কখনো দেখেননি,এলাকাটিতে তার কোনো সামাজিক বা দাপ্তরিক পরিচিতি নেই, দীর্ঘ ১৮ বছরের বাসিন্দারাও তাকে চিনেন না। অভিযোগপত্রে বলা হয়, জহিরুল ইসলাম নিজের পরিচয়কে গোপন করে ভুয়া ঠিকানা ব্যবহার করেন এবং উদ্দেশ্যমূলকভাবে নিজেকে ঢাকার স্থায়ী বাসিন্দা হিসেবে দেখান, যা প্রতারণার গুরুতর উদাহরণ। তথ্য গোপন ও জালিয়াতি—অভিযোগকারীদের দাবি অভিযোগে বলা হয়, নিয়োগের সময় জহিরুল ইসলাম তার প্রকৃত ঠিকানা ৬৯, বারবের টোলা, জিনজিরা, কেরানীগঞ্জ—এ তথ্যটি গোপন করেন। তিনি ভুয়া ঠিকানা ব্যবহার করছেন এমন অভিযোগ বহু দপ্তর থেকে উঠে এসেছে বলে দাবি করা হয়।এছাড়া—তিনি বিভিন্ন সময় বিভিন্ন দপ্তরে ভিন্ন ভিন্ন নাম, পরিচয় ও ঠিকানা ব্যবহার করেছেন, নিয়োগের পর অন্যত্র বদলি, স্থান পরিবর্তন ও দাপ্তরিক কাজে অসঙ্গতি লক্ষ্য করা গেছে, নিয়োগ-সংক্রান্ত প্রাথমিক যাচাইয়ে তিনি ভুল তথ্য প্রদান করেছেন, এবং অভিযোগকারীদের দাবি অনুযায়ী, তিনি একাধিক অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে সম্পদ অর্জন করেছেন। “সরকারি চাকরির শর্ত ভঙ্গ করেছেন”—অভিযোগকারীদের বক্তব্য অভিযোগকারীরা আরও দাবি করেন—“জহিরুল ইসলাম নিয়োগের অন্যতম শর্ত—স্থায়ী ঠিকানা যাচাই—উপেক্ষা করে জালিয়াতির মাধ্যমে সরকারি চাকরিতে প্রবেশ করেন। এটি সরকারি চাকরি আইন এবং নিয়োগ নীতিমালার সরাসরি লঙ্ঘন।”তারা বলেন, সরকারি চাকরির আবেদনে ভুয়া ঠিকানা ব্যবহার, নাগরিকত্ব সনদ জাল করা, এবং মূল তথ্য গোপন করা—এসবই শাস্তিযোগ্য অপরাধ। দুদকের হস্তক্ষেপ চাওয়া
অভিযোগকারীরা দুদক চেয়ারম্যান বরাবর দাখিলকৃত আবেদনে উল্লেখ করেন—নিয়োগের সময়কার সব নথিপত্র পুনঃতদন্ত করা,তার ব্যবহৃত নাগরিক সনদ, ঠিকানা, ও ব্যক্তিগত তথ্য যাচাই,ভুয়া তথ্য ব্যবহার করে চাকরি লাভের বিষয়টি তদন্ত,এবং তদন্ত চলাকালে তাকে অন্যত্র বদলি করার ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান।অভিযোগকারীদের ভাষ্যমতে—“তার বিরুদ্ধে স্পষ্ট অভিযোগ ও প্রমাণ রয়েছে। ভুয়া ঠিকানা, প্রতারণা, জালিয়াতি এবং দুর্নীতির মাধ্যমে সরকারি চাকরিতে প্রবেশের কারণে তার বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা প্রয়োজন।”
অফিস সহকারী-কামুকম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিক মোঃ জহিরুল ইসলামের নিকট উক্ত বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি জানান যে, আমার বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ করা হয়েছে। আমি যতদূর জেনেছি, আমার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলো সঠিক নয়। যেহেতু অভিযোগ করা হয়েছে, তাই যথাযথভাবে তদন্ত করা হোক। তদন্তে যদি আমি দোষী প্রমাণিত হই, তাহলে আমার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারেন।



Discussion about this post