
বশিরুল আলম, আলমডাঙ্গা (চুয়াডাঙ্গা) থেকে:- মানবতার টানে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সিজারিয়ান রোগীকে রক্তদান করেছিলেন আলমডাঙ্গার জামজামি বাজারের সুপরিচিত চা ব্যবসায়ী আজাদ খন্দকার (৫০)। কিন্তু সেই মানবিক কাজ শেষ করে আর ঘরে ফেরা হলো না তাঁর। বাড়ি ফেরার পথে গতরাতে মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারালেন তিনি। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন।আজাদ খন্দকার চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা উপজেলার ঘোষবিলা গ্রামের মৃত খন্দকার আবু তাহের ওরফে বুড়ো খন্দকারের বড় ছেলে। দীর্ঘদিন ধরে জামজামি বাজারে চা বিক্রির পাশাপাশি সবার সাথে আন্তরিকতা, সদালাপ ও মানবিক আচরণের জন্য তিনি ছিলেন অত্যন্ত জনপ্রিয়। পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, এক সিজারিয়ান রোগীর জরুরি রক্তের প্রয়োজন হলে বিনা দ্বিধায় রাজশাহীতে পৌঁছে রক্তদান করেন তিনি। পরে রাতে আলমডাঙ্গায় ফেরার পথে তাদের বহনকারী মাইক্রোবাসটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সড়কের পাশের একটি গাছের সাথে সজোরে ধাক্কা খায়। এতে আজাদ খন্দকার ঘটনাস্থলেই মৃত্যুবরণ করেন এবং কমপক্ষে তিনজন আহত হন। আহতরা রাজশাহী ও স্থানীয় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। মর্মান্তিক এই দুর্ঘটনার খবর জানাজানি হলে জামজামি বাজার, ঘোষবিলা গ্রামসহ আশপাশের এলাকায় নেমে আসে গভীর শোকের ছায়া। গ্রামের মানুষের ভাষায়— “আজাদ ভাই ছিলেন সবার আপনজন; তাঁর মতো সরল ও ভালো মানুষ আজকাল আর খুঁজে পাওয়া কঠিন।”স্থানীয়দের অভিযোগ, রাতের অন্ধকার, বেপরোয়া গতি এবং চালকের অসতর্কতার কারণেই দুর্ঘটনাটি ঘটেছে বলে মনে করছেন অনেকে। নিহতের পরিবার দ্রুত তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত কারণ উদঘাটন ও আহতদের সুচিকিৎসার দাবি জানিয়েছেন। মানবিকতার টানে প্রাণ দিতে পিছপা না হওয়া আজাদ খন্দকারের মৃত্যুতে শোকে ডুবে আছে পুরো এলাকা। তাঁর মৃত্যুতে যে শূন্যতা তৈরি হলো, তা সহজে পূরণ হবার নয়।



Discussion about this post