
মাহমুদ হাসান রনি, চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি:- চুয়াডাঙ্গার দর্শনাসবথ কেরু অ্যান্ড কোম্পানি লিমিটেডের শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়ন নির্বাচনের দিন ঘোষনার দাবিকে কেন্দ্র করে দু’শ্রমিক পক্ষের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এসময় উভয়পক্ষের ১০ জন আহত হয়েছেন। মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। প্রায় দুই ঘণ্টাব্যাপী সংঘর্ষে অন্তত ১০ শ্রমিক ও বহিরাগত ব্যক্তি আহত হন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ ও সেনা সদস্যরা যৌথ অভিযান চালায়। আহতরা হলেন- শ্রমিক আব্দুল মোতালেব (৫০), রবিউল ইসলাম (৪৮), সালাউদ্দিন (৩৫), উজ্জ্বল (৪০), সাইফুল ইসলাম মকুল (৫০), হিরোক (৪৮), রাসেল উদ্দিন টগর (৫০)সহ আরও কয়েকজন। তাদের স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। উল্লেখ্য সোমবার রাত থেকেই কেরু ক্যাম্পাস জুড়ে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। দীর্ঘদিন নির্বাচন না হওয়া এবং নেতৃত্ব সংকটের কারণে শ্রমিকদের মধ্যে ক্ষোভ তৈরি হয়। এরই ধারাবাহিকতায় মঙ্গলবার সকালে ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি তৈয়ব আলী ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক মনিরুল ইসলাম প্রিন্সের নেতৃত্বে পূর্বঘোষিত নির্বাচনের দাবিতে শ্রমিক সমাবেশের আহ্বান করা হয়। সমাবেশে বক্তারা অভিযোগ করেন, কেরু অ্যান্ড কোম্পানির সাবেক সভাপতি ফিরোজ আহম্মেদ সবুজ ও বর্তমান দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক রাব্বিক হাসান পরিকল্পিতভাবে নির্বাচন প্রক্রিয়া বন্ধ রাখতে চাইছেন।সমাবেশ চলাকালে ব্যবস্থাপনা পরিচালক রাব্বিক হাসান আলোচনার জন্য সাবেক সভাপতি সবুজকে অফিসে ডাকেন। সবুজ তার সমর্থকদের নিয়ে অফিসে প্রবেশ করলে হঠাৎ পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে।অভিযোগ রয়েছে, বহিরাগত কয়েকজন ব্যক্তি অফিসে ঢুকে চুক্তিভিত্তিক শ্রমিক মোতালেবের সঙ্গে তীব্র বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়ে। কিছুক্ষণের মধ্যেই দুই পক্ষের মধ্যে হাতাহাতি, ইট-পাটকেল নিক্ষেপ ও ধাওয়া-পাল্টাধাওয়ার ঘটনা শুরু হয়। কেরু ক্যাম্পাস, প্রশাসনিক ভবন ও আশপাশের পুরো এলাকা এক পর্যায়ে রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। সংঘর্ষের খবর পেয়ে দর্শনা থানার পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চালায়। কিছুক্ষণের মধ্যেই সেনা সদস্যদের একটি দলও অভিযানে যোগ দেয়। নিরাপত্তার স্বার্থে পুরো ক্যাম্পাসজুড়ে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। নির্বাচন নিয়ে ষড়যন্ত্র ও সংঘর্ষে উসকানি দেওয়ার অভিযোগ বিষয়ে কেরু অ্যান্ড কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক রাব্বিক হাসান বলেন, দুই পক্ষকে আলোচনা করতে ডাকা হয়েছিল। কিন্তু অফিসে ঢোকার পর এক পক্ষ হঠাৎ অপর পক্ষের ওপর হামলা চালায়। আমাকে ‘মাস্টারমাইন্ড’ বলা হচ্ছে- এ অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা। শ্রম আইনে ইউনিয়ন নির্বাচনে এমডির হস্তক্ষেপ নিষিদ্ধ। স্থানীয়রা জানান, পরিস্থিতি যেকোনো সময় আবারও অবনতি হতে পারে। দর্শনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি, তদন্ত) সুলতান মাহমুদ বলেন, ঘটনার পরপরই অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। সেনাবাহিনীও মাঠে রয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত, তবে আমরা সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে আছি।



Discussion about this post