
গাজীপুর প্রতিনিধি :- মাদক ব্যবসায়ীকে ধরতে গিয়ে বিয়ে বাড়িতে থেকে ৫ লাখ টাকা, ৪ ভরি স্বর্ণ নিয়ে চলে যাওয়ার পর আবার মোটরসাইকেল আনতে গেলে মাদক ব্যবসায়ীদের হামলার শিকার হন দুই পুলিশ সদস্য, এসময় এক মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করে পুলিশ। আহত দুই পুলিশ সদস্যকে উদ্ধার করে প্রথমে শহীদ তাজ উদ্দিন আহমেদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয় পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাদেরকে রাজারবাগ পুলিশ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। সোমবার (২৪ই নভেম্বর) মধ্যরাতে গাজীপুর মহানগরীর ভোড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। আহত দুই পুলিশ কর্মকর্তা হলেন, এএসআই আব্দুর রশিদ ও কনস্টেবল সাইফুল ইসলাম। তারা দুজনেই গাজীপুর সদর থানায় কর্মরত রয়েছেন। পুলিশের একটি সূত্র জানায়, গাজীপুর সদর থানাধীন ভোড়া এলাকায় মাদক মামলার আটক আসামি মো. আব্রাহাম রায়হানের আলামত জব্দ ও মাদক ব্যবসায়ী মমতাজ এবং শাহ জামাল ওরফে মালা পাগলাকে গ্রেপ্তারের চেষ্টাকালে কর্তব্যরত এএসআই আব্দুর রশিদ, কনস্টেবল সাইফুল ইসলাম সংঘবদ্ধ আক্রমণের শিকার হন। মাদক ব্যবসায়ী ও আসামির আত্মীয়-স্বজনসহ অন্যরা পুলিশ সদস্যদের ঘিরে ধরে মাথায় আঘাতসহ মারধর করে গুরুতর আহত করে। হামলায় এএসআই আব্দুর রশিদ ঘটনাস্থলে জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। সাইফুল ইসলাম আহত অবস্থায় দৌড়ে সরে গেলেও পরে জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন এবং চোর সন্দেহে স্থানীয়দের হাতে দ্বিতীয় দফা হামলার শিকার হন। পরে একজনের জ্ঞান ফিরে আসলে সে নিজেকে পুলিশ সদস্য বলে পরিচয় দেয়। স্থানীয়রা থানায় ফোন দিলে পুলিশ দু’জনকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নিয়ে যায়। এদিকে মাদক ব্যবসায়ীকে ধরতে গিয়ে বিয়ে বাড়িতে পুলিশের তান্ডব, নগদ টাকা ও স্বর্ণালংকার হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ তুলেন কনের বাবা খোরশেদ আলম। তিনি বলেন- মাদক কারবারি ধরার কথা বলে দুই সাদা পোশাকদারি লোক দেয়াল টপকে আমাদের বাড়িতে ঢুকে নগদ ৫ লাখ টাকা ও চার ভরি স্বর্ণ নিয়ে চলে যান কিছুক্ষণ পর আবার মোটরসাইকেল আনতে গেলে স্থানীয়দের হামলার শিকার হন তারা। এরপর এক গাড়ী পুলিশ এসে আমাদের ঘরের তালা কেটে ভিতরে ঢুকে ব্যাপক ভাংচুর করে তারা। নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, এর আগেও এই এ এস আই রশিদ মাদক ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে মাসোয়ারা নিয়েছে, গতরাতে দুইজন লোক সাদা পোশাকে এসে নগদ টাকা ও স্বর্ণ নিয়ে চলে যায়। পরে আবার আরেক মাদক ব্যবসায়ীর মোটরসাইকেল নিতে এসে গণধোলাইয়ের শিকার হন তারা। স্থানীয়রা বলেন, আসামী পেলে ধরে নিয়ে যাবে, আসামী না পেয়ে ঘরের জিনিসপত্র ভাংচুর করা এটা কোন আইনে করা হয়েছে। দুদিন পর মেয়ের বিয়ে। বিয়েকে কেন্দ্রকরে গরু ক্রয়সহ অন্যান্য কাজের জন্য জমা টাকা ও স্বর্ণ কেনো নিয়ে গেছে এটার তদন্ত দাবি করেন তারা। এই ঘটনায় ৮/১০ রাউন্ড গুলি ছোড়া হয়েছে বলে জানায় স্থানীয়রা তবে মহানগর পুলিশের এডিসি (অপরাধ উত্তর) রবিউল ইসলাম বলেন, গুলি নয় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে শটগান চার্জ করা হয়েছে। আসামীদের সাথে ধস্তাধস্তির সময় পুলিশের একটি অস্ত্র ও ওয়াকিটকি হারিয়ে গেলেও পরে সেটি পাওয়া গেছে বলেও জানান এই কর্মকর্তা। গাজীপুর সদর মেট্রো থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মেহেদী হাসান বলেন, মাদক ব্যবসায়ী ধরতে পুলিশের অভিযানের সময় দুই পুলিশ সদস্য হামলার শিকার হয়েছেন। তাদের শহীদ তাজউদ্দিন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ বিষয়ে মামলাসহ আইনি ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।



Discussion about this post