
বশিরুল আলম,আলমডাঙ্গা (চুয়াডাঙ্গা) থেকে: কারাগার মানেই শুধু শাস্তির প্রাচীর—এই ধারণা বদলেছে অনেক আগেই। পুনর্বাসন ও উৎপাদনশীলতার বার্তা নিয়ে দেশের বিভিন্ন কারাগারের মতো চুয়াডাঙ্গা জেলা কারাগারও নিজেদের ভেতরের পরিবেশ ও নান্দনিক ব্যবস্থাপনার পাশাপাশি কারাগার এলাকার বাহিরে অব্যবহৃত জমিতে মৌসুমী চাষাবাদ কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। কারা কর্তৃপক্ষের তত্ত্বাবধানে পরিচালিত এই চাষাবাদ এখন হয়ে উঠেছে আত্মনির্ভরশীলতার উৎকৃষ্ট উদাহরণ। চুয়াডাঙ্গা জেলা কারাগারের অভ্যন্তরে নিয়মিত কার্যক্রমের পাশাপাশি বন্দীদের শ্রম, সময় এবং দক্ষতা কাজে লাগিয়ে গড়ে তোলা হয়েছে মৌসুমী সবজি ও ফলের ক্ষুদ্র খামার। বর্তমানে এখানে শাকসবজি, মরিচ, পেঁপে, কলা, কচুসহ বিভিন্ন জাতের ফসল ফলানো হচ্ছে। কারাগার কর্তৃপক্ষের একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা জানান,
“আমাদের লক্ষ্য শুধু উৎপাদন নয়—বন্দীদের মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নয়ন, শ্রমে অভ্যস্ত করা এবং মুক্ত জীবনে তাদের কর্মসংস্থানের উপযোগী করে গড়ে তোলা। ”কারাগার এলাকার বাইরে দীর্ঘদিন অনাবাদি থাকা পতিত জায়গাকে কাজে লাগিয়ে বিভিন্ন মৌসুমে আলু, ধান, ভুট্টা, শাকসবজি ও ডালজাতীয় ফসল উৎপাদন করা হচ্ছে। ভূমি ব্যবহারের সর্বোচ্চ দক্ষতা নিশ্চিত করাই এই কর্মসূচির মূল উদ্দেশ্য।
প্রতিবছর এসব জমি থেকে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ সবজি ও ফসল উঠে, যা একদিকে কারাগারের খাদ্য সরবরাহে সহায়তা করে, অন্যদিকে অতিরিক্ত উৎপাদিত ফসল স্থানীয় বাজারেও বিক্রি করা সম্ভব হয়। মৌসুমী চাষাবাদ কর্মসূচি বন্দীদের নানাভাবে উপকার করছে—শারীরিক ও মানসিক সুস্থতা বৃদ্ধি কৃষি প্রশিক্ষণের সুযোগ মুক্তির পর কর্মসংস্থানে সহায়ক দক্ষতা অর্জন শ্রমের মর্যাদা ও সামাজিক পুনর্বাসনে সহায়ক ভূমিকা একজন বন্দী বলেন,
“এখানে কাজ করে আমরা নতুন জীবনের স্বপ্ন দেখি। মাটি আমাদের নতুনভাবে বাঁচতে শেখায়।”চুয়াডাঙ্গা জেলা কারাগারের এই উদ্যোগ শুধু খাদ্য উৎপাদন নয়, বরং মানবিক ও উন্নয়নমূলক ভাবনার একটি বাস্তব প্রয়াস। সরকারি নির্দেশনা ও আধুনিক কৃষি প্রযুক্তি ব্যবহার করে কারা কর্তৃপক্ষ এই চাষাবাদকে আরও সম্প্রসারণের পরিকল্পনা নিয়েছে।



Discussion about this post