
বশিরুল আলম,আলমডাঙ্গা (চুয়াডাঙ্গা) থেকে:- চুয়াডাঙ্গায় রাষ্ট্রীয় মর্যাদা ও উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে একদিনে পালিত হলো দুটি গুরুত্বপূর্ণ দিবস— আন্তর্জাতিক দুর্নীতিবিরোধী দিবস ২০২৫ এবং আন্তর্জাতিক নারী নির্যাতন প্রতিরোধ পক্ষ ও বেগম রোকেয়া দিবস–২০২৫। জেলা প্রশাসনের সার্বিক ব্যবস্থাপনায় আয়োজিত এ কর্মসূচিগুলোতে অংশ নেয় বিভিন্ন সরকারি দপ্তর, সামাজিক সংগঠন ও তরুণ প্রজন্মের প্রতিনিধিরা। মঙ্গলবার (৯ ডিসেম্বর) সকালে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় প্রাঙ্গণে মানববন্ধনের মাধ্যমে শুরু হয় আন্তর্জাতিক দুর্নীতিবিরোধী দিবস–২০২৫ উদযাপন। এবারের প্রতিপাদ্য ছিল— “দুর্নীতির বিরুদ্ধে তারুণ্যের ঐক্য: গড়বে আগামীর শুদ্ধতা”। দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক), সমন্বিত জেলা কার্যালয় ঝিনাইদহ এবং জেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটি, চুয়াডাঙ্গার যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত এ মানববন্ধনে শিক্ষার্থী, শিক্ষক, সরকারি-বেসরকারি কর্মকর্তা, সামাজিক সংগঠন ও বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশগ্রহণ করেন পরবর্তীতে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত হয় আলোচনা সভা। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চুয়াডাঙ্গার জেলা প্রশাসক ও বিজ্ঞ জেলা ম্যাজিস্ট্রেট জনাব মোহাম্মদ কামাল হোসেন। তিনি তাঁর বক্তব্যে বলেন, “যে জাতির তরুণরা দুর্নীতির বিরুদ্ধে সোচ্চার, সেই জাতিকে দমিয়ে রাখা যায় না। আগামী প্রজন্মকে শুদ্ধতার পথে এগিয়ে নিতে আমাদের সম্মিলিত উদ্যোগ প্রয়োজন।”দুপুরে পালিত হয় আন্তর্জাতিক নারী নির্যাতন প্রতিরোধ পক্ষ ও বেগম রোকেয়া দিবস–২০২৫। এ বছরের প্রতিপাদ্য— “নারী ও কন্যার প্রতি সহিংসতা বন্ধে ঐক্যবদ্ধ হই,ডিজিটাল নিরাপত্তা নিশ্চিত করি”। জেলা প্রশাসন ও মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের আয়োজনে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় প্রাঙ্গণ থেকে একটি বর্ণাঢ্য র্যালি বের হয়। ব্যানার-ফেস্টুন হাতে শিক্ষার্থী, নারী সংগঠনের প্রতিনিধি এবং কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পদযাত্রায় র্যালিটি শহরের দোয়েল মোড় ঘুরে পুনরায় জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে এসে শেষ হয়। আলোচনা সভায় বক্তারা ডিজিটাল যুগে নারী ও কন্যাশিশুর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সচেতনতা, শিক্ষা এবং পরিবার-সমাজের সম্মিলিত ভূমিকার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। বেগম রোকেয়া দিবস উপলক্ষে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রদান করা হয় “অদম্য নারী পুরস্কার ২০২৫”। সমাজে প্রতিবন্ধকতা জয় করে সফলতা অর্জনকারী বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার নারীদের হাতে এ সম্মাননা তুলে দেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামাল হোসেন। পুরস্কারপ্রাপ্ত নারীরা স্বপ্নপূরণে সংগ্রাম, সামাজিক বাধা অতিক্রম এবং সমাজে ইতিবাচক পরিবর্তন আনার অনুপ্রেরণাদায়ী গল্প তুলে ধরেন। এক দিনে দুটি জাতীয় দিবসের সফল আয়োজন জেলা প্রশাসনের প্রশাসনিক সক্ষমতা ও সচেতনতা বৃদ্ধিতে অঙ্গীকারের প্রকাশ বলে মনে করছেন অংশগ্রহণকারীরা। দুর্নীতিবিরোধী আন্দোলন এবং নারী নিরাপত্তা—দুটি ক্ষেত্রেই চুয়াডাঙ্গার তরুণ সমাজ, প্রশাসন এবং নাগরিকদের সক্রিয় অংশগ্রহণ বরাবরের মতোই আশাব্যঞ্জক।



Discussion about this post