
বশিরুল আলম, আলমডাঙ্গা (চুয়াডাঙ্গা) থেকে: চুয়াডাঙ্গা জেলা সমবায় কার্যালয়ে দুর্নীতির দায়ে বদলি হওয়া ভারপ্রাপ্ত জেলা সমবায় কর্মকর্তা কাজী বাবুল হোসেন বদলি আদেশের তিন মাস পরও বহাল তবিয়তে দায়িত্ব পালন করছেন—এমনই অভিযোগ পাওয়া গেছে। প্রশাসনিক আদেশ অমান্য করে তিনি শুধু নিয়মিত অফিসেই আসছেন না, বরং প্রতিষ্ঠানের যাবতীয় লেনদেন ও গুরুত্বপূর্ণ নথিতে সই-স্বাক্ষর করাসহ সকল দাপ্তরিক কার্যক্রমও পরিচালনা করছেন। ২০২২ সালের ২৬ ডিসেম্বর চুয়াডাঙ্গায় যোগদান করেন কাজী বাবুল হোসেন। কর্মকালীন সময়ে তার বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ গড়ে ওঠে। সেসব অভিযোগের প্রেক্ষিতে তদন্ত শেষে সমবায় অধিদপ্তর প্রশাসনিক কারণ দেখিয়ে গত ৩০ সেপ্টেম্বর তাকে কুষ্টিয়া জেলা সমবায় কার্যালয়ে উপসহকারী নিবন্ধক হিসেবে বদলি করে। পরবর্তীতে ৩০ নভেম্বর বিভাগীয় কার্যালয় তাকে আনুষ্ঠানিকভাবে রিলিজও প্রদান করে। কিন্তু এতকিছুর পরেও তিনি চুয়াডাঙ্গার দাপ্তরিক কর্মকাণ্ড একইভাবে চালিয়ে যাচ্ছেন বলে অভিযোগ জানিয়েছে স্থানীয় সূত্র। চুয়াডাঙ্গা জেলা সমবায় কার্যালয়ে বদলি হয়ে আসার কথা ছিল কুষ্টিয়ার উপসহকারী নিবন্ধক আনিছুর রহমানের। অভিযোগ রয়েছে, দায়িত্ব গ্রহণে যাতে তিনি সমস্যায় পড়েন, সেজন্য কাজী বাবুল হোসেন তাকে নানাভাবে ভয়ভীতি, এমনকি হুমকিও দিয়ে আসছেন। এতে নতুন কর্মকর্তার যোগদান অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়ে। স্থানীয় সমবায় সংশ্লিষ্টরা বিষয়টিকে “অদৃশ্য প্রভাবের ব্যবহার” হিসেবে সন্দেহ করছেন। নিজের অবস্থান সম্পর্কে জানতে চাইলে কাজী বাবুল হোসেন বলেন, “আমার বদলি আদেশ স্থগিত হতে পারে বলে শুনেছি। এজন্য ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত এখানে থাকতে হতে পারে। তাই নতুন কর্মস্থলে এখনো যোগদান করিনি।” তবে আদেশ স্থগিত হওয়ার বিষয়ে কোনো সরকারি নথি তিনি দেখাতে পারেননি বলে জানা গেছে। সমবায় অধিদপ্তরের নিবন্ধক ও মহাপরিচালক ইসমাইল হোসেন মুঠোফোনে জানান, “বিষয়টি খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে। কেন তিনি কর্মস্থল ত্যাগ করেননি—এটিও অনুসন্ধান করা হবে।”
এদিকে স্থানীয় সমবায় কর্মচারীরা মনে করছেন, উচ্চপদস্থ মহলের নজরদারি ও সুনির্দিষ্ট তদন্ত ছাড়া এ ধরনের প্রশাসনিক শৃঙ্খলাভঙ্গ দীর্ঘায়িত হতে পারে। সরকারি অফিসে বদলির আদেশ অমান্য করা সাধারণত গুরুতর অপরাধ হিসেবে বিবেচিত হয়। সংশ্লিষ্টদের মতে, কোনো কর্মকর্তা দায়িত্ব না ছাড়লে আর্থিক লেনদেনসহ দাপ্তরিক কার্যক্রম প্রশ্নবিদ্ধ হতে পারে।



Discussion about this post