
বশিরুল আলম, আলমডাঙ্গা (চুয়াডাঙ্গা) থেকে:- চুয়াডাঙ্গা শহরের সাতগাড়ী পুরাতন পাড়ার তরুণ বাবু (২৫) হঠাৎ করেই এক বিভীষিকাময় ঘটনার শিকার হন। বৃহস্পতিবার বেলা ১২টার দিকে চুয়াডাঙ্গা বিজিবি ক্যাম্পে পুলিশের ফায়ারিং অনুশীলনের সময় ছিটকে আসা একটি গুলি তার বুকে বিদ্ধ হয়। নিরাপদ এলাকায় সাধারণত এমন দুর্ঘটনার সম্ভাবনা কম, তবে এক অদৃশ্য মুহূর্তেই স্বাভাবিক জীবন থমকে যায় বাবুর। প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় সূত্র জানায়, অনুশীলন চলাকালে আকস্মিক একটি গুলি ক্যাম্প এলাকা পেরিয়ে বাবুর শরীরে লাগে। মুহূর্তেই রক্তাক্ত অবস্থায় মাটিতে লুটিয়ে পড়েন তিনি। স্থানীয়রা দ্রুত ছুটে এসে তাকে উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে নিয়ে যান। গুরুতর অবস্থায় জরুরি বিভাগ থেকে তাকে সঙ্গে সঙ্গে অপারেশন থিয়েটারে নেওয়া হয়। চিকিৎসকরা জানান, গুলি বাবুর বুকে গভীরভাবে বিঁধে থাকায় দ্রুত অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন হয়। তবে রক্তক্ষরণ বাড়তে থাকায় এবং জটিলতা বাড়ার আশঙ্কায় তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়। বিকেলের মধ্যেই অ্যাম্বুলেন্সে করে তাকে রাজশাহী নেওয়া হয়। বাবুর পরিবারের সদস্যরা কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, “এমন দুর্ঘটনা কীভাবে ঘটল— আমরা বুঝতে পারছি না। শুধু চাই, আমাদের বাবু বেঁচে ফিরুক।”নিরাপত্তা প্রশ্নে এলাকায় ক্ষোভ ঘটনার খবর ছড়িয়ে পড়তেই এলাকায় সাধারণ মানুষের মাঝে আতঙ্কের পাশাপাশি ক্ষোভ দেখা দেয়। প্রশিক্ষণ চলাকালে নিরাপত্তা নিশ্চিত না হওয়ায় প্রশ্ন তুলেছেন স্থানীয়রা। অনেকেই মনে করছেন, জনবসতিপূর্ণ এলাকাসংলগ্ন সশস্ত্র অনুশীলনে বাড়তি সতর্কতা নেওয়া জরুরি ছিল।এক স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, “বিজিবি ক্যাম্পে ফায়ারিং ট্রেনিং হয় জানি। কিন্তু গুলি এলাকায় এসে লাগবে— এটা ভাবতেও পারিনি।”ঘটনার পরপরই আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ক্যাম্প এলাকা ও আশপাশ পরিদর্শন করেছে। কীভাবে অনুশীলনের গুলি ছিটকে বাইরে এলো, দায়িত্বে থাকা সদস্যদের ত্রুটি ছিল কি না— এসব খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এক দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, “ঘটনাটি অত্যন্ত সংবেদনশীল। ইতোমধ্যে তদন্ত শুরু হয়েছে। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”এ ঘটনায় চুয়াডাঙ্গা জুড়ে দুশ্চিন্তার ছাপ।পরিচিত-অপরিচিত সবাই তার সুস্থতার জন্য দোয়া করছেন। বাবুর পরিবারের সদস্যরা অনাকাঙ্ক্ষিত দুর্ঘটনার দ্রুত সুষ্ঠু তদন্ত ও দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।



Discussion about this post