
বশিরুল আলম, আলমডাঙ্গা (চুয়াডাঙ্গা) থেকে:- আলমডাঙ্গার হারদী টু হাট বোয়ালিয়া সড়কের বৈদ্যনাথপুর কবরস্থানের পাশে সংঘটিত এক ভয়াবহ ডাকাতির ঘটনায় এলাকায় চরম আতঙ্ক ও উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়েছে। গত ২৩ ডিসেম্বর ২০২৫, মঙ্গলবার ভোররাতে সংঘবদ্ধ একদল ডাকাত আগ্নেয়াস্ত্র ও দেশীয় অস্ত্র প্রদর্শন করে একটি পাখিভ্যান থামিয়ে যাত্রীদের জিম্মি করে ডাকাতি সংঘটিত করে। প্রত্যক্ষদর্শী ও ভুক্তভোগীদের সূত্রে জানা যায়, ডাকাত দলটি পাখিভ্যানের যাত্রীদের কাছ থেকে নগদ টাকা ও মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেয় এবং শেষে পুরো ভ্যানটি নিয়ে পালিয়ে যায়। ভোরের নিস্তব্ধ সময়ে ঘটে যাওয়া এই ঘটনায় যাত্রীদের মধ্যে তীব্র আতঙ্ক সৃষ্টি হয়। স্থানীয়দের অভিযোগ, যে স্থানে এই ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে, সেখান থেকে ওসমানপুর–প্রাগপুর পুলিশ ক্যাম্প প্রায় ২ কিলোমিটার, হারদী সেনাবাহিনীর ক্যাম্প প্রায় ১ কিলোমিটার এবং হাট বোয়ালিয়া পুলিশ ক্যাম্পও প্রায় ১ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। এতগুলো নিরাপত্তা স্থাপনার কাছাকাছি এলাকায় ভোরবেলা ডাকাতির ঘটনা ঘটায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন সচেতন মহল।এলাকাবাসীর মতে, এই ঘটনা প্রমাণ করে অপরাধীরা দিন দিন আরও সংঘবদ্ধ ও ভয়ংকর হয়ে উঠছে। স্থানীয় এক বাসিন্দা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর উপর ভরসা করে এখন রাস্তায় চলাচল করাটাই ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। মনে হচ্ছে, নিজেদের নিরাপত্তা নিজেদেরই নিতে হবে।” আরও অভিযোগ করা হচ্ছে, পুলিশ প্রশাসন অপরাধীদের আটক করলেও তারা খুব অল্প সময়ের মধ্যেই আইনের ফাঁকফোকর দিয়ে জামিনে বেরিয়ে আসছে। এতে অপরাধ দমনে কার্যকর প্রতিরোধ গড়ে উঠছে না বলে মনে করছেন অনেকেই। স্থানীয়দের একাংশ রাজনৈতিক প্রভাব ও আইনি তৎপরতাকেও এই পরিস্থিতির জন্য দায়ী করছেন, যা নিয়ে এলাকায় ব্যাপক আলোচনা ও সমালোচনা চলছে। সবচেয়ে বড় প্রশ্ন উঠেছে—যে সড়কে নিয়মিত ছিনতাই ও ডাকাতির ঘটনা ঘটছে, সেখানে কেন রাত ৮টা থেকে ভোর ৬টা পর্যন্ত নিয়মিত টহল জোরদার করা হচ্ছে না? এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে জোর দাবি জানানো হয়েছে— হারদী টু হাট বোয়ালিয়া রোডে রাত ৮টা থেকে ভোর ৬টা পর্যন্ত পুলিশি টহল বৃদ্ধি। সেনাবাহিনীর যৌথ ও নিয়মিত টহল। সড়কের মাঝামাঝি স্থানে একটি স্থায়ী চেকপোস্ট স্থাপন। গোয়েন্দা নজরদারি বাড়িয়ে চোর, ছিনতাইকারী ও সংঘবদ্ধ ডাকাত চক্র শনাক্ত ও গ্রেপ্তার। দাগি অপরাধীদের বিরুদ্ধে বিশেষ অভিযান পরিচালনা। এলাকাবাসীর দৃঢ় বিশ্বাস, স্থানীয়ভাবে অপরাধী চক্রের মদদ ও আশ্রয় না থাকলে এই সড়কে বারবার এমন লোমহর্ষক ডাকাতির ঘটনা ঘটত না। তাদের ভাষায়, “নিশ্চয়ই সর্ষের মধ্যেই ভুত আছে।”এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের দ্রুত ও কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন স্থানীয় জনগণ। তা না হলে এই গুরুত্বপূর্ণ সড়কে সাধারণ মানুষের নিরাপদ চলাচল আরও অনিশ্চিত হয়ে পড়বে বলে আশঙ্কা করছেন তারা।



Discussion about this post