
আল আমিন, নাটোর প্রতিনিধি :- বস্তুনিষ্ঠ চোখে ক্যামেরার লেন্স—তাতে বন্দি সময়, আবেগ আর বাস্তবতা। আর এমনই শত চেনা-অচেনা মুহূর্তের সন্নিবেশে বৃহস্পতিবার (২২ মে) দিনভর উৎসবমুখর পরিবেশে অনুষ্ঠিত হলো বাংলাদেশ আর্মি ইউনিভার্সিটি অব ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজি (বাউয়েট)-এর ফটোগ্রাফি অ্যান্ড মিডিয়া ক্লাব আয়োজিত ‘ফটো এক্সিবিশন ২০২৫’।
নাটোরের বাগাতিপাড়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ভবনের প্লাজায় আয়োজিত এ প্রদর্শনীতে অংশ নেন ৫০ জন শিক্ষার্থী। তাঁদের তোলা শতাধিক ছবির মধ্য থেকে বাছাইকৃত ২০টি ছবি স্থান পায় প্রদর্শনীর গ্যালারিতে। পাশাপাশি, ভিডিও চিত্র প্রদর্শনীতেও অংশ নেন সাতজন শিক্ষার্থী, যাদের মধ্যে ৫টি ভিডিও নির্বাচিত হয়।
এক্সিবিশনের উদ্বোধন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোঃ মিজানুজ্জামান। ফিতা কেটে প্রদর্শনীর সূচনা শেষে তিনি বলেন, ‘এই আয়োজন শিক্ষার্থীদের সৃজনশীল চিন্তাকে উৎসাহিত করবে। তারা যে চোখ দিয়ে সমাজ, প্রকৃতি, আবেগ বা প্রযুক্তিকে দেখছে, তা নিঃসন্দেহে প্রশংসার দাবিদার।’ “শুধু পড়াশোনায় সীমাবদ্ধ না থেকে শিক্ষার্থীরা যদি নিজেদের অভ্যন্তরীণ প্রতিভা ও কল্পনাশক্তি প্রকাশ করতে পারে, তবেই একজন পরিপূর্ণ মানুষ গড়ে ওঠে।”
প্রদর্শনীর প্রতিটি ছবিই যেন একটি গল্পের অংশ। কোনো ছবিতে ধর্ষণের প্রতিবাদ, কোনোটি নিঃসঙ্গ প্রকৃতি, আবার কোনো ছবিতে দেখা গেছে শিশু শ্রম কিংবা প্রযুক্তির প্রভাব। এমন বৈচিত্র্যময় বিষয়বস্তুর কারণে দর্শনার্থীদের মাঝে ছিল দারুণ আগ্রহ। দর্শনার্থীদের একজন, সফটওয়্যার বিভাগের শিক্ষার্থী জান্নাতুল ফেরদৌস বলেন, ‘এত চমৎকার ছবিগুলো দেখে মুগ্ধ না হয়ে পারা যায় না। ভাবতেও পারিনি আমাদের সহপাঠীরা এতটা প্রতিভাবান।’
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন— বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার কর্নেল মোঃ শওকত হুসেন (অব.), পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক কর্নেল হ্লা হেন মং (অব.), লেফটেন্যান্ট কর্নেল কেএফএ সোহেল (অব.), ডেপুটি রেজিস্ট্রার (অ্যাডমিন) মোঃ মনজিনুল মুবীন (অব.), ডেপুটি রেজিস্ট্রার (একাডেমিক) মোঃ আশরাফুল ইসলাম এবং বিভিন্ন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ও শিক্ষকবৃন্দ।
ফটোগ্রাফি অ্যান্ড মিডিয়া ক্লাবের উপদেষ্টা সহকারী অধ্যাপক ড. মো. জাকির হোসাইন খান বলেন, ‘শুধু ক্যামেরা ধরলেই ছবি হয় না। শিক্ষার্থীদের ভাবনার গভীরতা এবং সমাজের প্রতি তাদের সংবেদনশীল দৃষ্টিভঙ্গিই এই ছবিগুলোকে অর্থবহ করে তুলেছে।’
প্রদর্শনী শেষে আয়োজকদের মধ্যে ক্লাবের সভাপতি তাকি হাসান ও সহসভাপতি মাহমুদ তায়েফ জানান, ভবিষ্যতেও এরকম আয়োজন নিয়মিত করতে চান তাঁরা। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থেকেও এমন আয়োজন অব্যাহত রাখার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়।



Discussion about this post