
মীর্জা গালিব : চুয়াডাঙ্গায় গত ২০ ঘণ্টায় পৃথক তিনটি সড়ক দুর্ঘটনায় মোট ৬ জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে একজন শিশু, একজন ইজিবাইকচালক, একজন মুরগির খামারকর্মী ও একজন মাদকাসক্ত ব্যক্তি রয়েছেন। আহত হয়েছেন অন্তত ৫ জন।
চুয়াডাঙ্গা সদরে ট্রাকচাপায় নিহত ৩, আহত ৪
শুক্রবার (৪ জুলাই) সন্ধ্যার ঠিক আগে চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার জাফরপুরে বিজিবি-৬ ব্যাটালিয়ন ক্যাম্পের সামনে একটি অয়েল ট্যাংকার ট্রাক একটি যাত্রীবাহী ইজিবাইককে ধাক্কা দিলে ঘটনাস্থলেই দুইজন নিহত হন। পরে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান আরও একজন। এ ঘটনায় আহত হন চারজন, যাদের মধ্যে এক শিশু রয়েছে। একজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. আল ইমরান জানান, “দুজনকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয় এবং আরেকজন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। আহত চারজনের মধ্যে একজনের অবস্থা খুবই গুরুতর।”
চুয়াডাঙ্গা সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) শহিদুর রহমান বলেন, “নিহতদের নাম-পরিচয় এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি। নিহত ও আহতদের পরিচয় শনাক্তের চেষ্টা চলছে।”
আলমডাঙ্গায় মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় বাবা–ছেলে নিহত – এর একদিন আগে, বৃহস্পতিবার রাত ১০টার দিকে আলমডাঙ্গা উপজেলার নওদাপাড়া এলাকায় মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় নিহত হন আরও দুইজন। নিহতরা হলেন আলমডাঙ্গা বেলগাছি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাহমুদুল হাসান চঞ্চলের ছেলে রিয়াদ (১৩) এবং তার মুরগির খামারের কর্মচারী পলাশ (৩৫)।
পুলিশ জানায়, কুষ্টিয়া থেকে বাজার করে ফিরছিলেন রিয়াদ ও পলাশ। ফেরার পথে নওদাপাড়ায় একটি দ্রুতগতির পিকআপ ভ্যান পেছন থেকে ধাক্কা দিলে তারা ছিটকে পড়েন। ঘটনাস্থলেই রিয়াদের মৃত্যু হয় এবং পলাশকে হাসপাতালে নেওয়ার পথে মারা যান।
আলমডাঙ্গা থানার ওসি মাসুদুর রহমান বলেন, “দুইজনের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। তবে এখনও কোনো অভিযোগ পাওয়া যায়নি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
একই রাতে পাখিভ্যান থেকে পড়ে প্রাণ গেল আরও একজনের – একই রাতে (বৃহস্পতিবার, রাত ১২:৩০টার দিকে) চুয়াডাঙ্গা আলমডাঙ্গা থানা ভবনের সামনে একটি ব্যাটারিচালিত পাখিভ্যান থেকে পড়ে মারা যান হান্নান হোসেন (৪৭)। তিনি কালিদাসপুর গ্রামের বাসিন্দা।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, হান্নান নেশাগ্রস্ত অবস্থায় পাখিভ্যানে উপজেলা পরিষদের দিকে যাচ্ছিলেন। থানা ভবনের সামনে স্পিডব্রেকারে ধাক্কা খেয়ে গাড়ি থেকে পড়ে গুরুতর আহত হন। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে একটি ক্লিনিকে নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়।
এ বিষয়ে আলমডাঙ্গা থানার ওসি মাসুদুর রহমান বলেন, “নিহত ব্যক্তি একজন পরিচিত মাদকাসক্ত। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, নেশাগ্রস্ত অবস্থায় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে গাড়ি থেকে পড়ে তিনি মারা গেছেন। ময়নাতদন্তের পর মৃত্যুর প্রকৃত কারণ নিশ্চিত হওয়া যাবে।”
সতর্কতা জরুরি : দুর্ঘটনার সংখ্যা যেভাবে বাড়ছে, তা উদ্বেগজনক। সাধারণ মানুষ, যানবাহনের চালক এবং প্রশাসনের যৌথ উদ্যোগেই সড়ক দুর্ঘটনা কমানো সম্ভব। গতি নিয়ন্ত্রণ, ট্রাফিক আইন মানা ও যানবাহন চলাচলের সুশৃঙ্খলতা নিশ্চিত করা এখন সময়ের দাবি।



Discussion about this post