
শেখ মামুনুর রশীদ মামুন:- গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া উপজেলায় পুলিশের শীর্ষ কর্মকর্তার আত্মীয় পরিচয়ে দীর্ঘদিন ধরে প্রভাব বিস্তার করছেন আলোচিত ও সমালোচিত সাবেক ছাত্রলীগ নেতা গাজী মাসুদ। স্থানীয়দের অভিযোগ, নিষিদ্ধ ঘোষিত আওয়ামী লীগের ব্যানারে তিনি এখনো সংগঠন গড়ে তুলে এলাকায় ত্রাস সৃষ্টি করছেন। টুঙ্গিপাড়া উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও পরে নিষিদ্ধ ঘোষিত আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবে গাজী মাসুদের উত্থান ঘটে। তৎকালীন ক্ষমতাসীন সরকারের ছায়াতলে থেকে তিনি নিয়োগ বাণিজ্য, টেন্ডার নিয়ন্ত্রণ, বদলির আশ্বাস দিয়ে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে হাতিয়ে নিয়েছেন কোটি কোটি টাকা। সূত্র মতে, তিনি নিজেকে পুলিশের আইজির শ্যালক পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন নিয়োগ-বদলিতে প্রভাব খাটানোর কথা বলে সাধারণ মানুষকে প্রতারণা করেছেন। এমনকি দলীয় নিরীহ কর্মীদেরও মামলা-হামলার ভয় দেখিয়ে অর্থ আদায়ের অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। সর্বশেষ গত ৫ জুন ২০২৫ তারিখে কুশলী ইউনিয়নে গাজী মাসুদের নেতৃত্বে প্রায় ২০০-৩০০ জনের একটি সংঘবদ্ধ সন্ত্রাসী বাহিনী দেশীয় অস্ত্র নিয়ে বিএনপি সমর্থকসহ স্থানীয় সাধারণ মানুষের উপর বর্বর হামলা চালায়। এই ঘটনায় কমপক্ষে ৮ জন মারাত্মক আহত হন এবং আরও প্রায় ২৫ জন গুরুতর জখম হন। আহতদের একজন মামলা করতে গেলে টুঙ্গিপাড়া থানা প্রথমে অভিযোগ নিতে অস্বীকৃতি জানায়। পরে একজন ভুক্তভোগী আদালতের শরণাপন্ন হলে আদালত সরাসরি এজাহার হিসেবে মামলা গ্রহণের নির্দেশ দেন। মামলা দায়ের হলেও প্রধান অভিযুক্ত গাজী মাসুদ এখনো গ্রেফতার হয়নি। মামলার বাদী শাহা আব্দুল করিম বর্তমানে চরম নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছেন। ওসির কাছে ফোনে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “আমি ব্যস্ত আছি, পরে ফোন করেন।” এদিকে গাজী মাসুদের ঢাকায় অবস্থানের তথ্য উঠে এসেছে। অভিযোগ রয়েছে, তিনি ‘হ্যাবেন লাইট’ নামক একটি বড় কোম্পানির চেয়ারম্যান মাসুমের নিরাপত্তা রক্ষাকারী হিসেবে মাসিক মোটা অঙ্কের অর্থ নিচ্ছেন। প্রশ্ন উঠেছে, কোন যোগ্যতায় তিনি ওই কোম্পানির অপারেশনস ডিরেক্টরের মতো গুরুত্বপূর্ণ পদে বসেছেন? গোপন সূত্রে জানা গেছে, হ্যাবেন লাইটের পেছনে রয়েছে সাবেক এক পুলিশ কমিশনার হাবিবের কোটি কোটি টাকার অবৈধ বিনিয়োগ। এই অর্থের ভাগবাটোয়ারায় গাজী মাসুদ ও হাবিবের ভাগিনার সক্রিয় অংশগ্রহণ রয়েছে বলে দাবি সংশ্লিষ্টদের। ঘনিষ্ঠ রাজনৈতিক সূত্র জানায়, এ ঘটনায় একটি মানবাধিকার সংস্থা স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ও শ্রম মন্ত্রণালয়ে লিখিত অভিযোগ জমা দিয়েছে। তবে এখনো পর্যন্ত এ বিষয়ে প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো দৃশ্যমান পদক্ষেপ নেয়া হয়নি, যা নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে এলাকাবাসীর মধ্যে।



Discussion about this post