
শেখ মামুনুর রশীদ মামুন:- মাদকবিরোধী অভিযানে ময়মনসিংহ নগরীর বাউন্ডারি রোড থেকে এক হাজার পিস ইয়াবাসহ নাসরিন আক্তার পারুল (৪০) নামে এক নারীকে হাতেনাতে গ্রেফতার করেছে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর। বুধবার (৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫) সকাল ১১টা ৪৫ মিনিট থেকে দুপুর ১২টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত পরিচালিত এ অভিযানে আসামির কাছ থেকে একটি কালো রেক্সিনের হাতব্যাগ উদ্ধার করা হয়, যেখানে পাঁচটি নীল পলিথিন জিপারে প্রতিটিতে ২০০ করে মোট ১,০০০ ইয়াবা ট্যাবলেট পাওয়া যায়। অভিযানে নেতৃত্ব দেন মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. আনোয়ার হোসেন। তার সঙ্গে ছিলেন পরিদর্শক মোহাম্মদ আমিনুল কবির, এএসআই মাইন উদ্দিন, সিপাহি রাজু মিয়া, সাব্বির আহমেদ, সালমান ফারসী এবং গাড়িচালক শরিফুল আলম। ঘটনাস্থলেই উপস্থিত ছিলেন দুই জন স্থানীয় সাক্ষী—এএসএম রুহুল আমিন (৬৫) এবং সোহান আকন্দ (২৯)। তাদের উপস্থিতিতে নিয়ম মেনে তল্লাশি চালানো হয়। তল্লাশিতে ইয়াবার পাশাপাশি একটি পুরোনো GDL ব্র্যান্ডের G8+ মডেলের বাটন মোবাইল ফোন (সিম নম্বর ০১৬২৯৪৫৩২১৮) উদ্ধার করা হয়। জব্দকৃত আলামতের আনুমানিক বাজারমূল্য প্রায় তিন লাখ টাকা। ঘটনাস্থলেই আলামতের জব্দ তালিকা তৈরি করে সাক্ষীদের স্বাক্ষর নেওয়া হয় এবং পরবর্তীতে নমুনা সংরক্ষণ করে বিভাগীয় হেফাজতে রাখা হয়। অভিযান শেষে উপ-পরিচালক আনোয়ার হোসেন বলেন, “মাদকের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত থাকবে। সমাজকে বাঁচাতে আমরা আরও কঠোর হব।” তবে নগরীর প্রাণকেন্দ্রে প্রকাশ্যে এমন বিপুল ইয়াবা উদ্ধারের ঘটনায় জনমনে তীব্র উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। সুশীল সমাজ প্রশ্ন তুলছে—শুধু নারী বা ছোটখাটো বাহক গ্রেফতার করলেই কি মাদকের বিস্তার রোধ করা সম্ভব? নেপথ্যে থাকা সিন্ডিকেটের মূল গডফাদাররা কেন ধরা ছোঁয়ার বাইরে রয়ে যাচ্ছে? বিশেষজ্ঞদের মতে, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন, ২০১৮-এর ৩৬(১) এর সারণী ১০(ক) ধারায় দায়ের হওয়া এই মামলার মতো মামলা অসংখ্য হলেও অধিকাংশ ক্ষেত্রেই বড় চক্রের হোতারা থেকে যায় ধরাছোঁয়ার বাইরে। রাজনীতি ও প্রশাসনের ছত্রছায়ায় বেড়ে ওঠা গডফাদারদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় না আনলে সরকারের ঘোষিত ‘মাদকমুক্ত সমাজ’ কেবল কাগজে-কলমেই সীমাবদ্ধ থেকে যাবে।



Discussion about this post